শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
সোবহান হোসাইন : ‘সরকার একটা ঘর দিলে মরার আগে শান্তিতে ঘুমাইতাম’- এমন আকুতি গৃহহীন অসহায় বৃদ্ধ নোমানের। বর্তমান সরকার জমি আছে ঘর নাই- এমন অসহায় লোকদের গৃহনির্মাণ করে দিলেও ময়মনসিংহের ত্রিশালে অসহায় বৃদ্ধ নোমান আলীর (৮২) ভাগ্যে জুটেনি বর্তমান সরকারের গৃহনির্মাণ প্রকল্পের ঘর।উপজেলার সদর ইউনিয়নের সতেরোপাড়া গ্রামের মৃত আক্তার আলী মণ্ডলের ছেলে অসহায় বৃদ্ধ নোমান আলী ৩০ বছর যাবত পুরাতন কাপড়-পাতা দিয়ে তৈরি ছাপড়া ঘরে বসবাস করছেন। গৃহহারা নোমান আলীর এই কষ্টের খবর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কোনো কর্মকর্তার নজরেও আসেনি।নোমানের স্ত্রী সুফিয়া কেঁদে কেঁদে বলেন, ”বাবা শীতের মধ্যে প্রতি বছর খুব কষ্ট করতে হয়। শীতের মধ্যে এত কম্বল সরকার দিল, আমাদের কপালে একটাও জোটেনি।” বৃদ্ধ কর্মহীন নোমানের দুই ছেলে ঢাকায় থেকে দিনমজুরের কাজ করে কোনোরকম সংসার চালান। নোমানের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বলেন, ছেলেদের সংসারই চলে না আমাদের কী দিবে।নোমানের এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা ছুটে যান বৃদ্ধ নোমানের ৩০ বছরের কষ্টের কথা শুনতে। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে বৃদ্ধ নোমান এবং তার স্ত্রী সুফিয়া কেঁদে কেঁদে বলেন, সরকার যদি একটা থাকার ঘর করে দিত, তাহলে মরার আগে শান্তি পাইতাম।নোমান অভিযোগ করেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের কাছে একটা ঘরের জন্য গেলেও তারা আমার কোনো কথা শুনে না। ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বৃদ্ধ নোমানের কাছে গিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাকে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহিদ আমীন বলেন, বৃদ্ধ নোমানকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দিয়েছি। সামনে ঘর নির্মাণের প্রকল্প এলে অবশ্যই তাকে ঘর দেয়া হবে।সরেজমিন দেখা গেছে, ভাঙা ঘর, ঘরের বেড়া নেই, পরনের ছেঁড়া কাপড় দিয়ে রোদ, বৃষ্টি ফেরানোর চেষ্টা। ঘরের ভেতর শোয়ার জন্য একটি বাঁশের মাচা করে বৃদ্ধ স্ত্রী সুফিয়া খাতুনকে নিয়ে কোনোরকম রাত কাটাচ্ছেন। রান্না করার জন্য নেই আলাদা কোনো ঘর। ঘরের ভেতরেই চলে রান্নার কাজ। বৃষ্টি হলেই তাদের দুজনকে ভিজতে হয় অবিরাম।
Leave a Reply