রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন

বাগেরহাট সদর চুলকাঠিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বরণে দৃষ্টিনন্দন বধ্যভূমি স্থাপন

বাগেরহাট সদর চুলকাঠিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বরণে দৃষ্টিনন্দন বধ্যভূমি স্থাপন

সোবহান হোসাইন  : বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই প্রিয় স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে আমরা সবাই একত্রে শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম। এভাবে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উদ্ধুদ্ধ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। আধুনিক উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ও দেশপ্রেম সবসময় প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক বুদ্ধিজীবী হত্যা একটি ন্যাক্করজনক ঘটনা। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে চুলকাঠি বাজারে বধ্যভূমি একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়।  প্রতিষ্ঠাকাল বর্তমান আধুনিক বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধটি ১৬ ই ডিসেম্বর ২০০৭ইং সালে উদ্বোধন করা হয়।ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানী হানাদানর বাহিনী কর্তৃক বুদ্ধজীবী হত্যা একটি ন্যাক্করজনক ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ভারতীয় মিত্রবাহিনী এবং আমাদের মুক্তিবাহিনী নিয়ে একটি যৌথ কমান্ড গঠিত হয়। এর ফলে স্থল, নৌপথ, ও আকাশ পথে একযোগে আক্রমন করা সম্ভব হয় হানাদার বাহিনীর উপর। এতে তারা সহজেই পর্যুদস্ত হয়। পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে পাকিস্তানি শাসকচক্র বাংলাদেশকে চিরতরে মেধাশূন্য করার এক ঘৃণ্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়। তারা ভেবেছিল এদেশকে মেধাশূন্য করা গেলে বাঙ্গালি জাতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে যাবে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু থেকেই তারা হত্যা করেছিল বাঙ্গালি জাতির বিবেক, চেতনা, মননশীলতা, ঐতিহ্য ও সংষ্কৃতির ধারক ও বাহক এ মাটির  সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। তবে ১০ থেকে ১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে এই বর্বরতা ও হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপধারন করে। পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর নির্দেশনা ও মদদে এদেশীয় একশ্রেনীর দালাল এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, নাট্যকার, শিল্পী প্রভৃতি শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং এই হত্যাযজ্ঞ ঘটায়।
 ৭১’সালের শহীদের নাম  :-
১। যজ্ঞেশ্বর পাল, চুলকাঠি
২। দুর্গা চরণ দেবনাথ, ঐ পিতা
৩। সুশীল কুমার দেবনাথ, ঐ পুত্র
৪। সন্তোষ দেবনাথ, ঐ
৫। রাখাল চন্দ্র দেবনাথ- ঘনশ্যামপুর
৬। খোরশেদ মল্লিক – ঘনশ্যামপুর
৭। শশী ভূষণ দাস- বেতাগা পিতা
৮। বাসুদেব দাস- ঐ পিতা
৯। দুলাল চন্দ্র দেবনাথ -খাজুরা
১০। বিজয় কৃষ্ণ পাল- রণজিতপুর
১১। মনমথ দেবনাথ-চুড়ামণি
এদেশের প্রথম সারির অনেক বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। তাদের স্মৃতিকে স্মরনীয় করে রাখতে এই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয় যা চুলকাঠি  বধ্যভূমি “স্মৃতিসৌধ” নামে পরিচিত। বর্তমান অবস্থাবর্তমানে বধ্যভূমি এলাকাটি সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। এতে একটি চমৎকার স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়েছে। উক্ত স্মৃতিসৌধটি নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে
মশিউর রহমান কিসলু আই সি চুলকাঠি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও বাজার কমিটিসহ এলাকাবাসী  এবং স্থপতি মশিউর রহমান কিসলু এর নকশায় নির্মিত। নান্দনিক নকশায় নির্মিত এই স্মৃতিসৌধটি গৃহায়ন চুলকাঠি বাজার বণিক সমিতি ও কমিটির  অধীনে রয়েছে। এখানে পর্যটকরা এসে অতীতের কথা জানতে পারে। খুলনা-মংলা মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে বাগেরহাট সদর চুলকাঠি কেন্দ্রীয় ঈদগা ময়দানের পার্শ্বে অবস্থিত। বধ্যভূমিতে দেখার জন্য দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। বধ্যভূমিটি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবনের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা মনে করিয়ে দেয় আমাদেরকে। এই সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।
Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০২০২১, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers