বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন
মোল্লা আব্দুর রব (বাগেরহাট অফিস)
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলার আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বাঙ্গাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের কাজের সুবিধার জন্য ৭৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ছয়টি জলযান। “আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই জলযানগুলো কেনা হবে। জলযান কেনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দ্বিতীয় বারের মত পরামর্শক নিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করার প্রক্রিয়া চলছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২১ সালের শেষের দিকে পর্যায়ক্রমে জাহাজগুলো মোংলা বন্দরে সংযুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কেনা জলযানগুলোর মধ্যে থাকবে, একটি পাইলট মাদার ভ্যাসেল, টাগবোট দু’টি, সার্স অ্যান্ড রেসকিউ ভ্যাসেল (উদ্ধারকারী জাহাজ) একটি, সার্ভে অ্যান্ড রিসার্স ভ্যাসেল একটি, বয়লিং ভ্যাসেল একটি। এসব জাহাজ কেনার জন্য এরই মধ্যে প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। জাহাজ কেনার পরামর্শক নিয়োগের জন্য একবার আন্তর্জাতিক দরপত্রও আহ্বান করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ওই দরপত্রটি বাতিল হয়ে যায় বিভিন্ন কারণে। আবার দরপত্র দেওয়ার জন্য অফিসিয়াল প্রক্রিয়া চলছে।
এর মধ্যে পাইলট মাদার ভ্যাসেল কেনায় ব্যয় হবে একশ’ ৯১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ জাহাজটি বন্দরে সংযুক্ত হলে মাদার ভ্যাসেল থেকে পাইলট, নাবিক ও ক্রুদের তীরে আনা নেওয়া আরও সহজ হবে। এ জাহাজের মাধ্যমে প্রয়োজনে বন্দরের নিরাপত্তার জন্য টহল জোরদার করা যাবে। নাবিক, ক্রু, পাইলট ও জাহাজের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের তীর বা বন্দর থেকে মাদার ভ্যাসেলে যাওয়া আসা আরও সহজ হবে। দু’টি টাগবোট কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। টাগবোট দু’টি বন্দরে যুক্ত হলে বন্দরে জাহাজ মুরিং (ভেঙ্গাতে এবং ঘোরাতে) করা সহজ হবে। নোঙ্গর করা আরও সহজ হবে। এ বোটের মাধ্যমে মাদার ভ্যাসেলকে প্রপেলার বন্ধ অবস্থায় টেনে আনা এবং দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজ টেনে নেওয়া ও অন্যান্য জাহাজের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করবে। একটি উদ্ধারকারী জাহাজ অর্থাৎ সার্স অ্যান্ড রেসকিউ ভ্যাসেল কেনায় ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আধুনিক এ জাহাজটি দিয়ে সমুদ্রে দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজ খুঁজে বের করা এবং দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজের নাবিক, ক্রু ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্ধার করা যাবে। এ জাহাজের কার্যক্রমে ঝঙ্গ, জলচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত জাহাজে ক্ষয়ক্ষতি কমবে বলে আশা বন্দর কর্তৃপক্ষের।বন্দর সংশ্লিষ্ট গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হবে সার্ভে অ্যান্ড রিসার্স ভ্যাসেল। এ জাহাজটি কেনায় ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৩টি ৪৪ লাখ টাকা। এ জাহাজটির মাধ্যমে নদী ও সমুদ্রে বিভিন্ন ধরনের জরিপের কাজে এবং সামুদ্রিক প্রাণী সম্পর্কে গবেষণার কাজ করা যাবে। বন্দরের চ্যানেলে বয়া স্থাপন ও বিভিন্ন সিগন্যাল দেওয়ার জন্য ১২৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে কেনা হবে একটি অত্যাধুনিক বয়লিং ভ্যাসেল। এটি দিয়ে স্বল্প সময়ে চ্যানেলের উপযুক্ত স্থানে সহজে বয়েল করা যাবে। এসব জাহাজ বন্দরে সংযুক্ত হলে বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বাঙ্গবে বলে আশা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাঙ্গাতে কাজ করে যাচ্ছি। এর জন্য আমরা পাঁচ ধরনের ছয়টি আধুনিক জলযান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে যত দ্রুত সম্ভব, জলযানগুলো মোংলা বন্দরে সংযুক্ত হবে। এছাঙ্গা মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বাঙ্গাতে নানা পরিকল্পনা রয়েছে।
Leave a Reply