শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১৯ অপরাহ্ন

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
ভর্তি চলিতেছ রৌফন রেডিয়ান্ট স্কুলে প্লে গ্রুপ থেকে শুরু। চুলকাটি বাজার, (রুটস বাংলাদেশ) বনিকপাড়া রোড, বাগেরহাট।
সংবাদ শিরোনাম :
বর্ণাঢ্য আয়োজনে রামপালে জাতীয় ভোটার দিবস পালন রামপালে স্থানীয় সরকার দিবস উদযাপন  বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা  প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী বিতরণ করেছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন পশুর চ্যানেলে তলা ফেটে দুর্ঘটনাকবলীত কার্গো জাহাজটি এখও ঝুকি মুক্ত নয়, চলছে কয়লা অপসারণ মোংলায় কয়লা নিয়ে পশুর নদীতে কার্গো ডুবি, ১১ নাবিক জীবিত উদ্ধার মোংলা বন্দরের সিবিএ’র কর্মচারী সঘের সাবেক সাঃ সম্পাদক এস এম ফিরোজ সহ ৩ জনের সদস্য পদ বাতিল ফকিরহাটের মাসকাটায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলার ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের। মাদারদিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা  মোংলা বন্দর ও উপকুলীয় এলাকায় হঠাৎ বৃষ্টি কেএমপি’র মাদক বিরোধী অভিযানে মাদক কারবারি ৮ জন আটক
শহীদ প্রেসিডেন্ট মুরসির শেষ মুহূর্তগুলো

শহীদ প্রেসিডেন্ট মুরসির শেষ মুহূর্তগুলো

জাতির সামনে তুলে ধরলেন,শহীদ প্রেসিডেন্ট মুরসির ছেলে

মিশরের একমাত্র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আমার শহীদ বাবাকে তাঁর শেষ বিশ্রামস্থলে শেষ বিদায় দেয়ার সময় আমরা বিস্ময়কর কিছু সুসংবাদের পূর্বাভাস দেখতে পেয়েছিলাম। তার বর্ণনা আপনাদের কাছে উপস্থাপন করছি…

আমরা তাঁকে শেষ বিদায় দিয়ে এসেছি। কিন্তু তাঁর কৃতিত্ব, কর্ম এবং সুনাম তাঁকে তাঁর দেশ জাতি এবং উম্মাহর মাঝে জীবন্ত করে রাখবে ইনশাআল্লাহ।

মৃত্যুর ১০ ঘণ্টা পর ত্বরা কারা হাসপাতালে আমরা তাঁর পবিত্র দেহ দেখার সুযোগ পেলাম। তখনও গোসল করানো বা কাফন পরানো হয়নি। আমাদের গোসল করানো এবং দাফন করার অনুমতি দেয়া হল।

সাজানো মামলায় কারাবন্দি ওসামাসহ আমরা চার ভাই, আমাদের মা, একমাত্র বোন এবং চাচা সাইয়িদ মুরসি; আমরা শহীদ মুরসির মরদেহ দেখতে হাসপাতালে প্রবেশের অনুমতি পাই। বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সেখানে ছিলেন।
আমরা তাঁর কাছে প্রবেশ করে তাঁর চেহারায় এক ধরণের বিমর্ষ ভাব লক্ষ্য করি। গোসল দেয়ার স্থানে আমরা নিরাপত্তা বাহিনীর কাউকে অবস্থান করার সুযোগ দেইনি। দরজা বন্ধ করার পর শহীদ মুরসির চেহারায় বিস্ময়কর পরিবর্তন দেখতে পেলাম। অত্যাচারীদের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় তাঁর চেহারায় যে বিরূপ ভাব ছিল তা বদলে তাঁর চেহারায় স্থির ও প্রশান্তির ছাপ স্পষ্ট হতে থাকল।
আমরা তাঁর জন্য দোয়া পড়তে শুরু করলাম এবং শেষবারের মতো তাঁর চেহারায় বিদায়ি চুমু এঁকে দিলাম। অতঃপর তাঁকে গোসল দেওয়া শুরু হলো। বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলাম তাঁর শরীর ও চেহারা আলোকিত হতে লাগল এবং তাঁর চেহারায় মুচকি হাসির আলামত প্রকাশ পেতে থাকল। অত্যাচারী নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে শহীদ মুহাম্মদ মুরসির চেহারার যে অবস্থা ছিল, তাতে হঠাৎ এমন পরিবর্তনে আমরা একেবারেই হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমাদের কাছে তা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল।
না, এটা হয়তো কোনো কারামত ছিল না, অথবা মৃত্যুর পর আবার জীবন ফিরে পেয়েছে এমনটাও নয়, হ্যাঁ তা ছিল একমাত্র আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সুসংবাদের পূর্বাভাস!

আমরা যতই তাঁর শরীরে পানি ঢালতে থাকি এবং তাঁকে গোসল দিতে থাকি ততই তাঁর চেহারায় মুচকি হাসির ভাব ফুটতে থাকে। আর যখন আমরা তাঁর কাফন পরানো শেষ করলাম তখনই ফজরের আজানের ধ্বনি শুনতে পেলাম। আমরা আমাদের বাবাকে দেখেছি, তিনি মুকিম থাকা অবস্থায় কখনো ফজরের নামাজ কাজা করতেন না বরং মসজিদে গিয়েই আদায় করতেন। এমনকি কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি প্রতিদিন ফজরের সময় আযান দিতেন এবং প্রথম সময়ে সালাত আদায় করতেন।

এই বরকতময় মুহূর্তে আব্বাজানের চেহারার শুভ্রতা আরো চমকাতে লাগলো। যেন রব্বে কারিমের পক্ষ থেকে আমাদের ওপর বিশেষ রহমত ও প্রশান্তি নাযিল হতে লাগল।
শহীদ মুহাম্মদ মুরসির পরিবারের সকলের দেখা এই দৃশ্যটি সম্ভবত আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মানের আলামত। তার ব্যাখ্যা এমন হতে পারে যে– শহীদ মুহাম্মদ মুরসি ঐ অপরাধী, খেয়ানতকারীরা থাকা অবস্থায় তাঁর আত্মা, যবান ও চেহারার মাধ্যমে যেন অত্যাচার, নির্যাতন ও অন্ধকারকে প্রত্যাখ্যান করছিলেন। যার ফলে তিনি তাদের সামনে সন্তুষ্টির চেহারা দেখাননি, আর যখনই তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে আসলেন তখন যেন সন্তুষ্টি ও সৌভাগ্যময় চেহারা নিয়ে অাবির্ভুত হলেন।

ফজরের সময় আজান চলা অবস্থায় আমরা তাঁর চার পুত্র তাঁকে বহন করে মসজিদের দিকে নিয়ে যাই এবং ফজরের সালাত আদায় করি। জালিমদের কাউকে তাঁর লাশ বহন করতে আমরা সম্মতি দেইনি। আমরা শহীদের পরিবারের সদস্যরা তাঁর সালাতুল জানাযা আদায় করি। তাদের কাউকে তাতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেইনি। আমরা তাঁর শাহাদাত কবুলের জন্য আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করলাম।
অতঃপর গাড়িতে করে আমরা তাঁকে বহন করে কায়রোর পূর্বাঞ্চল ‘নসর’ সিটিতে অবস্থিত ইখওয়ানুল মুসলিমিনের শীর্ষনেতাদের কবরস্থানে নিয়ে গেলাম। তাঁকে তাঁর সাথী ও সতীর্থ মুজাহিদ মাহদী আকিফের পাশের কবরে দাফন করা হয়। আল্লাহ তাআলাকে সাক্ষী করে বলছি, তাঁর চেহারায় ছিল সেই উজ্জ্বল দীপ্তি। জানি না তাঁর চেহারা আমাদের কোন্ সুসংবাদ শুনিয়ে যাচ্ছিল?

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাবার সাথে সর্বশেষ সাক্ষাতের সময় সর্বপ্রথম যার কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি হলেন- ওস্তাজ মাহদী আকিফ। আমরা তাঁকে জানাই যে, তিনি তো ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়লেন, এবং বললেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাউজে কাউসারের কাছে তাঁর সাথে সাক্ষাত করব, ইনশাআল্লাহ।

আমরা শহীদ মুহাম্মদ মুরসিকে তাঁর কবরে নামালাম এবং তাঁর চেহারা থেকে কাফনের কাপড় সরালাম। তাঁর চেহারা ছিল ঠিক পূর্ববর্তী শহীদ গাজীদের মতো এক পূর্ণিমার চাঁদ।

শহীদ পিতাকে শেষ বিদায় জানানোর মুহূর্তগুলোর কথা লিখেছেন মুরসিপুত্র আব্দুল্লাহ। তবে তিনি নিজেও ইন্তেকাল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা উভয়কে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নিন। আমিন।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

  1. © স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০২০২১, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers