বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২২ পূর্বাহ্ন
বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি।।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বিতর্কিত খানপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এবার পবিত্র ঈদে জন্য সরকারের দেয়া বিনামুল্যের চাল বিতারন না করে আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। তবে চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যারা ঈদের আগে বিনামুল্যের চাল নেয় নি তাদের চাল জমা রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সোমবার দুপুরে সহকারী কমিশনার (ভুমি) বাগেরহাট সদর এম সাইফুল্লাহ খানপুর ইউনিয়ন পরিষদে তদন্তে যান। এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে ঈদের তৃতীয় দিনের দুপুরে ৭২ জনের মাঝে আত্মসাদকৃত চাল বিতরন করা হয়।
ঘটনা বিষয়ে জানা গেছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ৯৪৮ জনের জন্য পবিত্র ঈদ উপলক্ষে বিনামুল্যে প্রতিজন কে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। যা ঈদের আগেই বিতারন করার কথা। অথচ, সরকারের মহৎ উদ্যোগের এ চাল সকলকে না দিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ইউপি চেয়ারম্যানসহ একটি চক্র ৭২০ কেজি চাল পরিষদের গুদামে রেখে দেয়। রবিবার রাতে পরিষদের গুদাম থেকে অতিগোপনে নসিমন যোগে চাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে গেলে স্থানীয় জনতার নজরে পড়ে এবং গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করে রাখে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রবিবার মধ্যরাতেই সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) এম সাইফুল্লাহ ওই ইউনিয়ন পরিষদে যান এবং গুদাম তালাবদ্ধ করে রাখেন। তদন্ত শেষে সোমবার পরবর্ত্তি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। সে অনুযায়ী সোমবার দুপুরে গুদাম খুলে সাড়ে ৩০ বস্তা চাল পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিন বলেন মাষ্টাররোল অনুযায়ী যারা ঈদের আগে চাল নেয়নি তাদের চাল গুদামে জমা রাখা হয়। এ বিষয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার বা কারো অনুমতি নেয়া হয় নি বলেও জানা যায়। সোমবার তদন্ত চলাকালে ইউপি সদস্য ও চৌকিদারের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুনারায় চাল নিতে আসা ২ নং ওয়ার্ডের তানজিলা বেগম, সুফিয়া বেগম ময়না বেগম ও ৫ নং ওয়ার্ডের রোজিনা বেগম, নুরুন নাহার বলেন ঈদের আগে আমাদের চাল দেয় নি। এখন ধরা পড়ার পর ইউপি সদস্য ও চৌকিদার দিয়ে আমাদের ওই চাল নিতে বলেন চেয়ারম্যান। এ সময় ওই ইউনিয়নের একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যান তার স্ত্রী সংরক্ষিত নারী সদস্যসহ চেয়ারম্যানের আরো ২/১জন সহযোগী মিলে পরিষদে আসা বিভিন্ন বরাদ্দ নামে মাত্র দিয়ে বাকীটা ভাগবাটোয়ারা করে নিজেরা খায়। রবিবার রাতে এক নসিমন চাল পরিষদ থেকে অন্যত্র পাচার করে দেয়ার পর এলাকাবাসীর নজরে আসলে সাধারন মানুষ ক্ষিপ্ত হয় এবং পরিষদের গুদাম পাহারা দেয়। দুস্থদের মাঝে সরকারের দেয়া চাল বিতারন না করে আত্মসাত করার বিষয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মহম উদ্দিন বলেন, আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যারা সময়মত চাল নেয় নি তাদের টা পরিষদের গুদামে রাখা হয়েছে। আর কিছু না। ঘটনাস্থলে তদন্তে যাওয়া নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বাগেরহাট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) এম সাইফুল্লাহ বলেন তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোমবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বাগেরহাট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) এম সাইফুল্লাহ র উপস্থিতিতে ৭২ জনের মাঝে আত্মসাদকৃত চাল ১০ কেজি করে বিতরন করে ইউনিয়ন পরিষদ। এবিষয় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন যে চাল ঈদের আগে দেওয়ার কথা সেই চাল ঈদের তৃতীয় দিনে দেওয়া হলো কেন এটা সবার প্রশ্ন । তিনি আরো বলেন যেখানে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৩০ বস্তা চাল উদ্ধার করলো সেই চাল নিয়ে আজ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার রহস্যজনক ভুমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন এসব নারীরা ঈদের আগে বারবার ইউনিয়ন পরিষদে ধন্যাদিয়েও চাল পায়নি আজ আবার তাদের ডেকে চাল দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply