শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
ফকিরহাট প্রতিনিধি।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের হদেরহাটের চিন্তিরখোর গ্রামে রিক্তা পাড়ই (২৭) নামের এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ওই গৃহবধুর পিতার পরিবারের দাবী তাকে নির্যাতনের পর পরিকল্পিত ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। অপরদিকে, শ্বশুরবাড়ীর লোকজন দাবী করেন সে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছে। এদিকে, হাসপাতালে মরদেহ ফেলে রেখে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ীর লোকজন পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের স্বজনরা।
স্থানীয়রা ও রিক্তার পরিবার জানায়, ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের হরিচাঁদ পাড়ই এর কন্যা রিক্তা পাড়ই (২০) এর সাথে গত দুই বছর পূর্বে বারুইপাড়া ইউনিয়নের হদেরহাটের চিন্তিরখোর গ্রামের মুদি দোকান ব্যবসায়ী তুষার বিশ্বাসের সাথে পারিবারিক ভাবে হিন্দু শাস্ত্রীয় মতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর তারা সূখেই ছিল। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে কারণে অকাণে ও নানা অজুহাতে রিক্তাকে তার স্বামী বিভিন্ন ভাবে শারিরিক ও মানষিক নির্যাতন করেই আসছিল। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে কয়েক দফা শালিশী বৈঠক হয়েছে। গৃহবধু রিক্তার ৬মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে রিক্তার সাথে তার পিতা হরিচ্াঁন পাড়ই সাথে সর্বশেষ কথা হয়। তখন সে জানায় তাকে আবারো নির্যাতন করা হচ্ছে। তাকে যেন বাড়িতে নিয়ে যায়। এর কিছু সময় পর অর্থাৎ সন্ধ্যার দিকে হরিচ্াঁন পাড়ই কাছে খবর আসে তার মেয়ে রিক্তা কীটনাশক পান করেছে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেখানে যেতে বলা হয়। মেয়ের কীটনাশক পান করার খবর পেয়ে হরিচ্াঁন পাড়ইসহ তার স্বজনরা ছুটে যান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে যাওয়ার পর রিক্তার স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। এরপর মেয়েকে হাসপাতালে খুজতে থাকে। একপর্যায় দেখে একটি ট্রলির উপর রিক্তা পাড়ই এর মৃতদেহ পড়ে আছে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১লা ডিসেম্বর (শুক্রবার) বিকেল রিক্তার মরদেহ বাবার বাড়ি ফকিরহাটের গুড়গুরিয়া গ্রামে নিয়ে আসেন মৃতের পরিবার। এদিন সন্ধ্যায় তাকে সমাধিস্ত করা হয়। রিক্তার জ্যাঠা রাজেশ্বর পাড়ইসহ স্বজনরা বলেন, মৃত্যুর পর রিক্তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এখনো আসেনি বা খোজ খবর নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় খুলনার সেনাডাঙ্গা খানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিক, গৃহবধু রিক্তার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ধ্রæমজালের সৃষ্টি হয়েছে। আসলে সে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছে নাকি নির্যাতনে মারা যাওয়ার পর মূখে বিষ ঢেলে দেয়া হয়েছে এ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ময়না তদন্ত প্রতিবেদন আসলে মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলেও পুলিশ জানিয়েছেন।
Leave a Reply