মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন
বাগেরহাট প্রতিনিধি
আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করীমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।বুধবার (১৬ ফেব্রয়ারি) দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে জামিন না মঞ্জুর করে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ রবিউল ইসলাম এই আদেশ দেন।মেয়রকে কারাগারে নেওয়ার সময় ছবি তুলতে গেলে তাতে বাধা দেন মেয়রের কর্মী-সমর্থকরা।এসময় ক্যামেরা ভেংেগ ফেলার ও সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তারা।এদিকে মেয়রকে কারাগারে প্রেরণের সংবাদে তার নেতাকর্মীরা খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের আদালতের সামনেসহ একাধিক স্থানে সড়ক অবরোধ করে।পরবর্তীতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় তারা।আদালতে আসামিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী নকীব সাইফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড: ড, একে আজাদ ফিরোজ টিপু সহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ্যাড: মিলন কুমার ব্যানার্জি।এই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করলে গত ৩১ জানুয়ারি বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদেরকে তিন সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আতœসমার্পনের নির্দেশ দেন।আদালত সূত্রে জানা যায়,অবৈধ নিয়োগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করিমের নামে গত বছরের ২৫ নভেম্বর মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।খুলনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।এর আগে ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে নামে দুদকের খুলনা কার্যালয়।মামলা সূ্ত্ের জানা যায়,বাগেরহাট পৌরসভায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে ১ কোটি ২৬ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা আত্মসাতের অপরাধে মেয়রসহ ১৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়।অন্যদিকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বাগেরহাটে আবাহনী ক্লাবের কমপ্লে¬ক্স ভবন নির্মাণ এবং বাগেরহাট ডায়াবেটিক হাসপাতাল কমপ্লে¬ক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করে এক কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান এবং বাগেরহাট পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে আসামি করে আরও একটি মামলা করা হয়।আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড: ড. একে আজাদ ফিরোজ টিপু বলেন,পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান এবং বাগেরহাট পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করে।আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।যেহেতু মেয়র শারীরীক ভাবে অসুস্থ তার প্রয়োজনী কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন। আমরা এই মামলাটি আইনীভাবে মোকাবেলা করব।এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জি বলেন,যা ঘটেছে আপনারা দেখেছেন।এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।এদিকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সহস্রাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে পৌর মেয়র ও সচিবকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।এসময়,গনমাধ্যমকর্মীরা ছবি তুলতে গেলে বাধা দেন মেয়রের কর্মী-সমর্থকরা।এসময় ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলা ও সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তারা।এদিকে মেয়রকে কারাগারে প্রেরণের সংবাদে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের আদালতের সামনেসহ একাধিক স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা।রাস্তার দুইপাশে বাস রেখে এবং পলিথিনে আগুন ধরিয়ে যান চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করেন অবরোধকারীরা।কিছু সময় পরে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তারা।
Leave a Reply