শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন
বাগেরহাট অফিস
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ২৯ দিনেও উদ্ধার হয়নি অপহরণের শিকার স্কুল শিক্ষার্থী সাদিয়া খানম (১৪)।এমনকি কোথায় আছে কেমন আছে,তাও জানা নেই পরিবারের।দিন যত গড়াচ্ছে পরিবারের উদ্বেগ-উৎকন্ঠাও তত বাড়ছে।পরিবারের শঙ্কা অপহরণকারীরা দেশের বাইরে পাচার করে দিয়েছে মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে।দ্রুত মেধাবী স্কুল শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবী গ্রামবাসী ও স্বজনদের।ভিকটিমকে উদ্ধার ও অপহরনের মুল হোতোকে দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান।
অপহৃত শিক্ষার্থী সাদিয়া মোল্লাহাট উপজেলার শাসন গ্রামের আরিফুল আলম মুন্সির মেয়ে।সে স্থানীয় সাচিয়াদাহ-চুনখোলা এবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী।
অপহৃত শিক্ষার্থীর অসহায় বাবা আরিফুল আলম মুন্সি বলেন,বাড়ি থেকে প্রতিদিনের মত ২৬ আগস্ট প্রাইভেট পড়তে চুনখোলা বাজারে যায় সাদিয়া।কিন্তু প্রাইভেট পড়া শেষে আর বাড়ি ফেরেনি সাদিয়া।পরে জানতে পারি পার্শ্ববর্তী চুনখোলা গ্রামের শাকিল চৌধুরী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সাদিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।মেয়েকে ফিরে পেতে ১লা সেপ্টেম্বর শাকিল চৌধুরী,আরিফ চৌধুরীসহ তিনজনকে আসামী করে মোল্লাহাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।এখন পর্যন্ত জানতে পারলাম না আমার মেয়ে কোথায় আছে।মেয়ের চিন্তায় আমার স্ত্রীও অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। যেকোন সময় খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে।আমার মেয়েকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন। সাদিয়ার মা শিরিন খাতুন বলেন,২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে চুনখোলা গ্রামের শাকিলসহ তিনটি বখাটে ছেলে বিভিন্ন সময় সাদিয়াকে উত্তক্ত করত।এমনকি অপহরণের হুমকীও দিয়েছিল বখাটেরা। বিষয়টি বখাটেদের পরিবারকে জানানো হয়।পরবর্তীতে গ্রামবাসীর মধ্যস্তায় ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যায় ওই বখাটেরা।ওই বখাটেরাই আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে। তিনি আরও বলেন,ওরা আমার সাদিয়াকে বিক্রি করে দিয়েছে,নয়ত পাচার করে দিয়েছে।তা না হলে যেকোন ভাবে সাদিয়া আমাকে ফোন করত।১৪-১৫ বছর বয়সে সাদিয়া কখনও আমাকে ছাড়া থাকেনি।আমি আমার মেয়েকে ফিরে চাই,এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অসহায় এই মা। সাদিয়ার প্রতিবেশী ফিরোজা বেগম বলেন,ছোট বেলা থেকেই সাদিয়া খুবই নম্র ও ভদ্র।সাদিয়ার মত একটা ভাল মেয়েকে যারা অপহরণ করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। মোল্লা মোতালেফ হোসেন,শিকদার মাহমুদুল হাসান,বীর মুক্তিযোদ্ধা নওয়াব আলী শিকদারসহ স্থানীয়রা বলেন, দিনে দুপুরে একটা জলয্যন্ত মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেল,আর আমরা কিছু করতে পারলাম না। এটা খুবই দুঃখজনক।পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি যত দ্রুত সম্ভব এই মেয়েকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুণ। বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,অপহরণ মামলার তিন আাসামীর মধ্যে আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করেছি।ভিকটিমকে উদ্ধার ও প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply