শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন
প্রতীকী ছবি
বাগেরহাট অফিস
৫৪৪ দিন পরে স্কুলে এসে খুশি বাগেরহাটের শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসেছেন তারা। প্রতিটি স্কুলে উচ্ছসিত ছিল শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পরে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পেরে খুশি হয়েছেন অভিভাবকরাও। শিক্ষকরাও খুশি শিক্ষার্থীদের পেয়ে। নির্ধারিত সময় শেষে বাড়ি ফিরেছেন তারা।রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে বাগেরহাট সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান গেট দিয়ে মাস্ক পরে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেখা যায়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজের ব্যবস্থা
করেছেন। প্রতিটি শ্রেণি কক্ষে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরন করে নিয়েছেন। অন্যান্য সময়ের মত একে অপরের কাঁধে হাত অথবা কোলাকুলির দৃশ্য না থাকলেও শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে ছিল অন্যরকম অন্যরকম এক আনন্দ অনুভূতির ছোয়া। উচ্ছসিত ছিল প্রতিটি শিক্ষার্থী।
বালিকা বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ্জোহরা ইমা বলেন, খুব ভোরে স্বাভাবিকভাবে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেছে।গতকাল রাতেই প্রস্তুত করে রাখা স্কুল ব্যাগ ও বই নিয়ে আম্মুর সাথে স্কুলে এসেছি।অনেকদিন পড়ে স্কুলে এসে আমার খুব ভাল লাগছে।স্যাররাও আমাদের অনেক আদর করেছেন।দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী
অবনি বলেন,অনেকদিন পরে স্কুলে এসে পুরোনো বন্ধুদের সাথে কুশল বিনিময় করছি,এতদিনের না বলা কথা শেয়ার করছি।কিযে ভাল লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।তবে করোনার আগে আমরা যেমন এক সাথে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারছি।এখন তা পারছিনা।অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস হচ্ছে।এই প্রথম মাস্ক পরিহিত অবস্থায় সবাই স্কুলে আসল।আগে কোন দিন মাস্ক পরে স্কুলে আসিনি।তারপরও যে ক্লাস হচ্ছে তাতে আমরা খুশি।বিদ্যালয়ের গেটের সামনে সন্তানের জন্য অপেক্ষারত অভিভাবক ছবি ইসলাম বলেন,এতদিন স্কুল বন্ধ থাকায় সন্তানদের নিয়ে এক ধরণের চিন্তায় ছিলাম।সকালে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে এসেছি,খুব ভাল লাগছে।এখন একটু চিন্তামুক্ত হলাম।বাগেরহাট সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন পাল বলেন,প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সন্তোষজনক।শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমরা স্যানিটাইজসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছি।এক সাথে অনেক শিক্ষার্থীর পাঠদান আমরা বন্ধ রেখেছি।শিফট অনুযায়ী অল্প অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শুধু বাগেরহাট সরকারি বালিকা বিদ্যালয় নয়,জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি ছিল।প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছেন।এছাড়াও সরকারের উর্দ্ধোতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিগণ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শণ করেছেন।বাগেরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন,সরকারি নির্দেশনা
অনুযায়ী আমরা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু করেছি।সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শণ করেছি।সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করছেন।পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটে ১১৬২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক লক্ষ ৯৩ হাজার ৫০৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮৮ হাজার শিক্ষার্থী, ১৬৪টি মাদরাসায় ৩০ হাজার ৬৪৮ শিক্ষার্থী রয়েছে।এর বাইরে ৩৪টি স্নাতক পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং ১৩৪টি কিন্ডার গার্টেনে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।
Leave a Reply