সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:০৩ পূর্বাহ্ন
পি কে অলোক,নিজস্ব প্রতিবেদক
বাগেরহাটের ফকিরহাটে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সরকারী পুকুর পুনঃখননে পুকুর চুরি কারবার শুরু হয়েছে। কাজ মাঝামাঝি যেতে না যেতেই তা ধসে পুকুর গর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক নিয়মে কাজ করার জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা গেছে, ভু-উপরস্থ পানি ব্যাবহারের লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ভরাট হয়ে যাওয়া জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সরকারী পুকুর গুলি পুনঃখনন করে সেখানে যাহাতে সুপ্রিয় পানি ব্যাবহার করা যায়, সেই লক্ষ নিয়ে ভরাট হওয়া পুকুর গুলি পুনঃখননের কাজ চলছিল। সে মোতাবেক ২০২০-২১অর্থ বছরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত প্রায় ১৩টি পুকুর দুইটি প্যাকেজে টেন্ডার এর মাধ্যমে পুকুর গুলি পুনঃখনন করে সাইডের রাস্তায় ইটের সলিং সিমেন্টের ব্যাচঢালাই পিলার ও তার পার্শ্বে তা’রকাটার বেড়া সহ ১টি বৃহৎ আকারের ফিল্টার স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। এজন্য দুই প্যাকেজে ভিন্ন ভিন্ন টেন্ডার আহবান করা হয়। প্রথম প্যাকেজে আনুমানিক দুই কোটি ৭লক্ষ, এবং দ্বিতীয় প্যাকেজে দুই কোটি ১২লক্ষ টাকা বরাদ্ধ হয়। গোপালগঞ্জের মনির ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্টান টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পেয়ে ১৩টি পুকুর পুনঃখননের কাজ শুরু করেন। কিন্তু শুরুতেই কাজের মান কিছুটা ভাল হলেও তা মাঝামাঝি সময়ে দেখা দিয়েছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। ১৩টি পুকুরের মধ্যে প্রায় ৭টি পুকুরের পাড়, ইটের সলিং, বাউন্ডারী পিলার সহ তার কাটার বেড়া ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে উপড়ে পড়ে যায়। স্থানীয়রা বলেছেন, পুকুর খননের সময় যথাযত নিয়ম কানুন না মানার কারনে পুকুরের পাড় ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে চলে গেছে। তাছাড়া সিমেন্টের পিলারে ব্যাচঢালাই না দিয়ে দায়সারা ভাবে পিলার গুলো তৈরী করায় তা মাটির নিচেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেনা। নিয়মানুযায়ী ষ্টিমিট অনুযায়ী সঠিক কাজ করা হয়নী। যে কারণে পুকুর খননের কাজ মাঝামাঝি সময় যেতে না যেতেই তা ধসে পুকুর গর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকলেও তাদের অবহেলা ও উদাসিনতার কারণে এমন হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।সরেজমিনে, অনুসন্ধ্যানে গিয়ে দেখা গেছে, শুভদিয়া ইউনিয়নের ঘনশ্যামপুর গ্রামে অবস্থিত জেলা পরিষদের মালিকানাধিন পুকুরটির দুই পার্শ্বে সদ্য নির্মানাধীন ইটের সলিং পিলার তার কাটার বেড়া নিয়ে জয়াল ধরে পুকুরের মধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে। মানসা-বাহিরদিয়া ইউনিয়নের লালচন্দ্রপুর গ্রামে অবস্থিত জেলা পরিষদের মালিকানাধীন পুকুরটির একই অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে ইটের সলিং তার কাটার বেড়া ভেঙ্গেচুরে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, যা নিজে চোখে না দেখলে বুঝার উপায় নেই। এছাড়া অনুরুপ ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের ব্রাম্মনরাংদিয়া মিরাখালী তালপুকুর,পাইকপাড়া দাউদ আলীর বাড়ির পার্শ্বে, মৌলভী পাড়ায় ও পাগলা শ্যামনগর দুইটি পুকুরসহ প্রায় ৭টি পুকুরে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলেছেন পুকুর পুনঃখননে পুকুর চুরি কারবারী করা হয়েছে। শুরুতেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে কাজ শেষ করে যখন জেলা পরিষদের কাছে কাজ বুঝে দিবেন তখন কি হবে। এটা কি আধো টেকসই হবে। তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে ফকিরহাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ আল আমীন এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হন নি। এবিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, পুকুরের বিষয়টি আমি দেখেছি, সত্যিই এটা দুঃখ জনক।
Leave a Reply