রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা  উপলক্ষে জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বাগেরহাট জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ঈদ মোবারক
সংবাদ শিরোনাম :
‘‘স্বপ্নের সোনালী ফসলে সেঁজেছে সবুজ সমারোহ কৃষকের মাঠ হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে”

‘‘স্বপ্নের সোনালী ফসলে সেঁজেছে সবুজ সমারোহ কৃষকের মাঠ হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে”

চুলকাঠি ডেস্ক 

ঝলমলে সোনা রাঙা রোদ পড়েছে গ্রামের মাঠে মাঠে। যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে অফুরান সবুজের সমারোহ।আর পতিত জমিতে স্বপ্নের বোরো ফসল ফলাতে ব্যস্ত কৃষকরা।ভোর হতে না হতেই কেউ ধানের জালা ভাঙছেন, কেউ বুনছেন চারা।আবার অনেকেই ফসলি জমিতে সেচ দেওয়ার কাজও করছেন।কৃষি প্রধান বাগেরহাটের সদর উপজেলার চুলকাঠি শস্যভার খ্যাত সৈয়দপুর গ্রামের মাঠে মাঠে দেখা মেলে কৃষকদের দিনমান এমন কর্মযজ্ঞ।মাঠের পর মাঠে ঠিক যেন এক সবুজ দিগন্ত রেখা ঢেউ তুলছে। নিজেদের স্বপ্ন সোনা হয়ে ফললে তবেই স্বস্তি কৃষক কুলের।সম্প্রতি ওই গ্রামে সরেজমিনে, গিয়ে কৃষকের এমন কর্মব্যস্তই দেখা যায়।ঘাম ঝরানো বোরো ফসল নিয়ে অনেক স্বপ্ন ও সাধের কথা উচ্চারিত হলো স্থানীয় সুনগর গ্রামের কৃষক আব্দুল্লা-আল দুলালের কণ্ঠে। পয়ত্রিশের মতো বয়স তার। ২৬ শতাংশ জমিতে বোরো ধান আবাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তিনি।এদিকে, কবে নাগাদ বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু করা যায়। এবার ধানের দাম কেমন মিলতে পারে এসব বিষয় নিয়ে জমির পাশে সড়কে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষক জমিতে বোরো ধানের জালা বাছাইয়ের কাজের পাশাপাশি এক কৃষাণি জানান, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের পুরোটা সময় বোরো ধান রোপণ করা যায়।একটু বিলম্বে বোরো চাষের কারণ সম্পর্কে ওই কৃষাণি বলেন, ‘দেরিতে কল (গভীর নলকূপ) চালু হইছে। জমিতে মাত্র সেচ দেওয়া হইছে। এবার নামা জমিতে ভালো ফলন অইবো। সর্ব সাকুল্যে ২০ মণ ধান পেতে পারেন বলেও জানান তিনি।খানিকটা এগুতেই দৃষ্টিতে এলো বোরো ধানের চারা রোপণে আরও বেশ কয়েকজনের ব্যস্ততা। প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণে কাদা পানিতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বিল্লাল হোসেন, লাল মিয়া, দুলাল মিয়া, ইব্রাহিম ও আবুল কাশেমসহ কয়েকজন। তাদের বয়স ত্রিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ বছরের মধ্যে।তাদের একজন কাঁঠিতে রশি বেঁধে এ মাথা থেকে ওই মাথায় মাপ দিচ্ছেন। ধানের চারা রোপণ যাতে বাঁকা না হয় সেজন্যেই চলছে এই কাজ।এসব কৃষকের চোখে-মুখে আশার সোনালি ঝিলিক দেখে প্রথমেই মনে হলো তারা নিজেদের জমিতে চারা রোপণে মেতেছেন। কিন্তু বিল্লালের সঙ্গে আলাপ জমাতেই জানা যায়, তারা একেকজন দিনমজুর। স্থানীয় গৃহস্থ আবু তাহেরের জমিতে তারা বোরো চারা রোপণ করছেন।প্রতিদিন তারা একেকজন আড়াই থেকে তিনশ’ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। এ মৌসুমের পুরোটা সময় থাকবেন এ কাজে।স্মিত হেসে আঞ্চলিক ভাষায় আবুল কাশেম বলেন, ‘আমগোর তো ভাই জমি নাই। মায়নার (মাইনে) বিনিময়ে অন্যের জমিতে কাম করি। তাই এ মৌসুমে এই কাম বাইছা নিছি। ’ভোর থেকেই বোরো আবাদে নেমে পড়ায় দুপুরে বাড়ি গিয়ে খাবারও সময় পাচ্ছেন না এসব শ্রমিক। সকালে ডাল দিয়ে আটার রুটি খেয়ে খেতে নেমে পড়েছিলেন বিল্লাল ও কাশেমরা।দুপুর গড়াতেই তাদের বাড়ি থেকে খাবার আসে। কাদামাখা শরীরে জমির আইলে বসেই খাওয়ার কাজ সারতেও দেখা গেলো তাদের।বোরো মৌসুম সেচ নির্ভর। স্বপ্নের ফসল ফলাতে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য অনেক চাষিকে নালা প্রস্তুত করতে দেখা যায়। তাদেরই একজন একই গ্রামেরই বাসিন্দা ইব্রাহিম (৪০)। তিনি নালায় কোদাল চালিয়ে নিবিষ্ট মনে কাদা সরাচ্ছিলেন।প্রায় ৪২ শতাংশ জমিতে এবার বোরো আবাদ করেছেন তিনি। এজন্য প্রতি কাঠায় তাকে গুনতে হচ্ছে সাড়ে ৩’শ টাকা। গত মৌসুমে বোরো ধানের ভালো ফলন পেয়েছিলেন। কিন্তু কাঙিক্ষত দাম পাননি। এ নিয়ে খানিকটা দুশ্চিন্তা রয়েছে। তবুও আশাবাদী এ কৃষক।এবার ধানের ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে ইব্রাহিম বলেন, ‘এইবারও ফলন ভালো অইবো। আমগোর স্বপ্ন সোনা হইয়াই ফলবো। সরকার ধানের ন্যায্য দাম এইবার দিবো। শেখের (শেখ মুজিব) বেটি আমগোরে (কৃষকদের) কান্দাইবো না’।

 

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ – ২০২৪, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers