শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
ভর্তি চলিতেছ রৌফন রেডিয়ান্ট স্কুলে প্লে গ্রুপ থেকে শুরু। চুলকাটি বাজার, (রুটস বাংলাদেশ) বনিকপাড়া রোড, বাগেরহাট।
সংবাদ শিরোনাম :
নয়ন স্মৃতি নাইট শর্ট ক্রিকেট টুর্নামেন্টে সৈয়দপুর চ্যাম্পিয়ন আত্মসমর্পণকারী দস্যুরা পেল র‌্যাবের ঈদ উপহার বাগেরহাটে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন শেখ তন্ময় এমপি বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির দাবিতে মোংলায় মানববন্ধন বর্ণাঢ্য আয়োজনে রামপালে জাতীয় ভোটার দিবস পালন রামপালে স্থানীয় সরকার দিবস উদযাপন  বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা  প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী বিতরণ করেছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন পশুর চ্যানেলে তলা ফেটে দুর্ঘটনাকবলীত কার্গো জাহাজটি এখও ঝুকি মুক্ত নয়, চলছে কয়লা অপসারণ মোংলায় কয়লা নিয়ে পশুর নদীতে কার্গো ডুবি, ১১ নাবিক জীবিত উদ্ধার মোংলা বন্দরের সিবিএ’র কর্মচারী সঘের সাবেক সাঃ সম্পাদক এস এম ফিরোজ সহ ৩ জনের সদস্য পদ বাতিল
ফকিরহাটের চিংড়ি শিল্প দরপতনের কারণে নেমেছে ধস, দিশেহারা চিংড়ি চাষীরা।

ফকিরহাটের চিংড়ি শিল্প দরপতনের কারণে নেমেছে ধস, দিশেহারা চিংড়ি চাষীরা।

জাকারিয়া হোসাইন শাওন, (নিজস্ব প্রতিবেদক)

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ বাংলাদেশের বৃহৎ চিংড়ি আড়ৎ। হোয়াইট গোল্ড নামে খ্যাত এই চিংড়ি শিল্প দিন দিন ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে দরপতনের কারণে।
চিংড়ি চাষের সাথে জড়িত এমন কয়েকজন ঘের মালিকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, পূর্বের বছরগুলোর তুলনায় এবছর তুলনামূলক ঘেরের হারি বেশি। চিংড়ি পোনার দাম ঊর্ধ্বগতি, খাবারের দাম বেশি, ঘের প্রসেসিংয়ের জন্য মালামাল এবং শ্রমিকের দাম বেশি। কিন্তু মাছের দাম কম। আর তার জন্যই দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ চাষিরা। উৎপাদন খরচের তুলনায় বিক্রয় মূল্য কম হওয়াতে পথে বসতে শুরু করেছে অনেক চিংড়ি চাষী। সম্প্রতি করোনা প্রাদুর্ভাব আসার পর থেকে ব্যাংক লোন এবং এনজিও লোন বন্ধ থাকায় অনেকেই চিংড়ি চাষের খরচ এড়ানোর জন্য বিকল্প হিসেবে সাদা মাছের চাষ করেছেন। কিন্তু সেখানেও দরপত্তনের কারণে দিশেহারা সাদা মাছের চাষীরা। উৎপাদন খরচের তুলনায় মূল্য কম পাওয়ার কারণে মৎস্য খাবারের দোকানে বাকি পড়েছে অনেক টাকা। পূর্বের ব্যাংক ঋণ এবং এনজিও ঋনের কিস্তি চেপে বসেছে মাথার উপর। অনেকে আবার ধার-দেনা করে মৎস্য চাষের পুঁজি জোগাড় করেছেন। এসব পাওনাদারদের চাপে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আবার অনেকে ভিটেমাটি বিক্রি করে পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধ করছেন।
মৎস আড়ৎ মালিক এবং কয়েকজন মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীর সাথে আলাপকালে তারা জানান- অত্র মার্কেটে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং সিন্ডিকেটের কারণে এমন দর পতন হতে পারে। তারা আরো জানান এখানকার কিছু ডিপো মালিক অধিক মুনাফার আশায় নিজের ডিপোতে বসে চিংড়ি চাষের হেডলেস প্রসেসিং করে থাকে। আর সে সময়ে মাছের ওজন বাড়ানোর জন্য পুশ করা হয় জেলি এবং শিশা। এসব কারণে পূর্বে বহুবার রপ্তানি করা মাছ ফেরত পাঠানো হয়েছে বহির্বিশ্বের মার্কেট থেকে। সংকুচিত হয়েছে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা চিংড়ি মাছের বহির্বিশ্বের মার্কেট। আগের তুলনায় মাছের উৎপাদন অনেক বেশি। কিন্তু রপ্তানি কমেছে বহুগুণ। বহির্বিশ্বের চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশ চিংড়ি উৎপাদন অনেক বেশি হওয়ায় এমন দর পত্তন হতে পারে বলেও তারা জানান।
এ বিষয়ে ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিটলার গোলদার জানান – বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চিংড়ি মার্কেট ফলতিতা বাজার মুলঘর ইউনিয়ন এর ভেতরে। সে সুবাদে তিনি বিভিন্ন সময়ে মৎস্য মার্কেট পরিদর্শন করে থাকেন। এ বাজারে কোন ব্যবসায়ীর অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তিনি স্থানীয় ভাবে তা হস্তক্ষেপ করে সমাধান করে থাকেন এবং গুরুতর কোন বিষয়ে তিনি প্রশাসনের সহায়তায় নিয়ে থাকেন। তবুও এখানকার কিছু ব্যবসায়ী গোপনে মাছে জেলি পুশ করে থাকেন বলে অনেকেই তার কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তিনি ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায় এই মৎস্য আড়ৎ গুলোতে রাস্তার উপর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেনাবেচা হচ্ছে মাছ। এখানকার ডিপো মালিক এবং ব্যবসায়ীদের উপজেলা প্রশাসন থেকে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও মানছেনা কোন নীতিমালা। একদিকে যেমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেনাবেচা হচ্ছে তেমনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি। একই সাথে রয়েছে বাটখারার মাধ্যমে ওজনে কম দেওয়া। ভুক্তভোগীরা জানান অধিকাংশ মৎস্য ডিপোতে রয়েছে কম ওজনের বাটখারা। তারা সব সময়ই দুই সেট বাট করা সংরক্ষণে রাখেন। মৎস্য চাষীদের কাছ থেকে মাছ ক্রয়ের সময় কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করা হয়। আর ভ্রাম্যমাণ আদালত আসলে সঠিক ওজনের বাটখারা দেখানো হয়। যার দরুন প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে মৎস্য চাষিরা।
এখানকার মৎস্যচাষীদের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় উন্নত প্রশিক্ষণ, স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান,স্থানীয় প্রশাসনের সার্বক্ষণিক মার্কেট তদারকির মাধ্যমে এবং বহির্বিশ্বে অধিক ভাবে মার্কেট সৃষ্টি করতে পারলেই আবারো সম্ভাবনা মিলবে চিংড়ি শিল্পের এমনটাই দাবি করেন সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

  1. © স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০২০২১, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers