শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৪ অপরাহ্ন
চুলকাঠি অফিস
পদ্মা সেতুকে বাস্তব রূপ দিতে নানা চড়াই-উৎড়াই পাড়ি দিতে হয়েছে এবং প্রমাণ করতে হয়েছে নিজেদের আর্থিক সক্ষমতার। সব ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বসছে পদ্মাসেতুর সবশেষ স্প্যান। এর মাধ্যমে সড়কপথে, সংযুক্ত হতে যাচ্ছে পদ্মার দুই পাড় মাওয়া ও জাজিরা। প্রায় সোয়া ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু নির্মাণে বাংলাদেশকে পাড়ি দিতে হয়েছে নানা বাধা, প্রমাণ করতে হয়েছে নিজেদের আর্থিক সক্ষমতা।পদ্মা সেতু পুরো দৃশ্যমান হওয়ার কথা ছিলো ২০১৩ সালে। দেরি হলো, কিন্তু তবুও স্বপ্নকে সত্যি করলো বাংলাদেশ। স্বপ্নযাত্রার শুরুটা বহু আগে। ১৯৯৮-৯৯ সালে। তখন প্রমত্তা পদ্মায় সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারেও ছিলো সেতুর প্রতিশ্রুতি।
২০১১ সালে এগিয়ে আসে বিশ্বব্যাংক। কথা দেয় ১২০ কোটি ডলার দেবে সংস্থাটি। জাইকা ৪০ কোটি, এডিবি ৬২ কোটি, আর ১৪ কোটি ডলার অর্থসহায়তা দেয়ার চুক্তি করে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক। সেতু নির্মাণের কাজ পায় কানাডিয় কোম্পানি এসএনসি লাভালিন। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই হোঁচট খায় পদ্মাসেতু প্রকল্প।দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে, ২০১২ সালের জুনে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায় সবগুলো দাতাসংস্থা। সরে যেতে হয় যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে। পরের মাসে, নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।২০১৩-১৪ অর্থবছরে পদ্মাসেতুর জন্য ৬ হাজার ৮৫২ কোটি বরাদ্দ দেয়া বাজেটে। শুরু হয় আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। মূল সেতু নির্মাণের কাজ পায় চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সেতুর নির্মাণ যাত্রা। নদীর বুকে পদ্মাসেতু প্রথম দৃশ্যমান হয় ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর। এদিন ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুটির ওপর স্প্যান বসান প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা। সময়ের সাথে দীর্ঘ হয়েছে সেতুর অবয়ব।শুরুতে পদ্মাসেতু তৈরিতে খরচ ধরা হয়েছিলো ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। এখন ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি। মূল সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ আগেই শেষ হয়েছে। আর পুরো সেতুর সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৮২ শতাংশ। সরকার আশা করছে আগামী ডিসেম্বরেই সেতুতে গাড়ি চলবে। আর এই সেতুর নিচ দিয়েই চলবে রেল। যা চালু হতে লাগবে আরো ৩ বছর।
Leave a Reply