রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৪ পূর্বাহ্ন

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা  উপলক্ষে জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বাগেরহাট জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ঈদ মোবারক
সংবাদ শিরোনাম :
সুন্দরবনে শুরু শুটকি মাছ আহরণ মৌসুম, ছুটছে জেলেরা

সুন্দরবনে শুরু শুটকি মাছ আহরণ মৌসুম, ছুটছে জেলেরা

মোল্লা আব্দুর রব বাগেরহাট
মোংলা ও শরণখোলা উপজেলার লোকালয় থেকে ৭৫ নটিক্যাল মাইল দূরে বঙ্গোপসাগর উপকু’লে পাঁচটি চর নিয়ে সুন্দরবনের সর্ববৃহৎ সামুদ্রিক মাছ শুটকি পল্লী কেন্দ্র দুবলার অবস্থান। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলারচর, আলোরকোল, নারকেল বাড়ীয়া, শেলারচর ও মেহেরআলীর চর নিয়ে এই অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠা এই পল্লী সামুদ্রিক মাছ শুটকি করার কাজ। প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মার্চ পযন্র্— চলে এই এই অস্থায়ী পল্লী সামুদ্রিক মাছ শুটকির কাজ। ১৫ থেকে ২০ হাজার জেলে ও বহরদারা সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে অস্থায়ী শুটকি পল্লীতে অস্থায়ী ঘর করে সামুদ্রিক সাদা মাছসহ চিংড়ি ও কাঁকড়া আহরণ করে। সুন্দরবনের দুবলার চরের শুটকি পল্লীর জেলেরা কম-বেশি ৩০ প্রকার জাল ব্যবহার করে মাছ রোদে শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানির জন্য উপযোগী করে তোলে। বৃহস্পতিবার (৫নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনের সুন্দরবনের দুবলার চরে শুটকির জন্য মাছ আহরণ ও প্রক্রিয়াকরণ মৌসুম।বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ জানায়, এবছর শীতে করোনা প্রকোপ বাড়ার আশংকা মাথায় রেখেই স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরে শুটকি পল্লী করার অনুমিত দিয়েছে বন বিভাগ। ১৫ জন বহরদারের (জেলে মহাজন) ১৫ থেকে ২০ হাজার জেলে বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে বাগেরহাটের মোংলা থেকে মাছ ধরার জন্য নৌকা- জাল নিয়ে চরে অস্থায়ী বসত গড়ে তোলর সরঞ্জাম নিয়ে যাত্রা করেছে দুবলা শুটকি পল্লীর উদ্যেশে। যাত্রার আগে সেরে নিয়েছেন ধর্ম অনুযায়ী নৌকায় মিলাদ ও পূজার আনুষ্ঠানিকতাও। এসব বহরদার ও জেলেরা সুন্দরবনের দুবলার চরে শুটকি পল্লীতে যেতে জড়ো হয়েছেন বাগেরহাটের মোংলার পশুর নদীর চিলা খালে। এর আতে তারা সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে সরকারী অনুমতি (পাস পারমিট) নিয়েছেন বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চাঁদপাই গ্রামের জেলে রহমত আলী (৫০) বলেন, আমি এবার ৩০ জন জেলে নিয়ে সুন্দরবনের শুটকি পল্লীতে যাচ্ছি। সেখানে সমস্যা অনেক। যেমন সেখানে কোন হাসপাতাল নেই, আমাদের কেউ অসুস্থ্য হলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। কেউ অসুস্থ্য হওয়ার পর শরণখোলা ও মোংলা আনতে আনতে পথেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই সেখানে একটি হাসপাতাল করা হোক। আসছে শীত মৌসুমের পুরাটাই জেলেদের থাকতে হবে সাগর ও সুন্দরবনের শুটকি পল্লীতে। তাই সেখানে করোনার প্রকোপ বাড়লে আমাদের পড়তে হবে চরম বিপদে। তাই চরে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপনের দাবী আমার মতো সব জেলেদের।
জেলেদের এ যৌক্তিক দাবীর বিষয়ে সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই দুবলা চরের অস্থায় শুটকি পল্লীর ১৫ থেকে ২০ হাজার জেলে ও বহরদারা মাছ আহরণ ও শুটকি তৈরির কাজ করতে জড়ো হবে। সেখানে যেহেতু অনেক লোকের সমাগম ঘটবে তাই তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে সেখানে ভাসমান স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন জরুরী বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, তা না হলে ওখানে যে কোন একজন কোনভাবে সংক্রমিত হলে তা ছড়িয়ে যাবে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মাঝে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, গত ২০১৮-১৯ শুটকি আহরন মৌসুমে জেলেদের আহরিত ৪১ হাজর ৫৪ কুইনন্টাল শুটকি থেকে বন বিভাগ ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ও ২০১৯-২০ মৌসুমে ৪৪ হাজর ৭১৩ কুইনন্টাল শুটকি থেকে বন বিভাগ ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। আর এবার শুটকি খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ধরাছে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। তবে আবহাওয়ার উপর নির্ভর করবে রাজস্ব আদায় কম-বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছে তিনি।শীতে করোনার প্রকোপ বাড়বে। তাই স্বাস্থ্য বিধি মানাসহ বেশ কিছু শর্তে জেলে-বহরদারদেরকে শুককি পল্লীতে যাবার অনুমতি দেয়া হয়েছে। আর করোনা বিধি নিষেধের বিষয়টি গুরুত্বেও সাথে দেখা ও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপের নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুটকি আহরন মৌসুমে দুবলায় একটি অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র থাকবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ – ২০২৪, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers