শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা  উপলক্ষে জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বাগেরহাট জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ঈদ মোবারক
সংবাদ শিরোনাম :
চুলকাটিতে বিশাল গরু ছাগলের হাটের শুভ উদ্বোধন  চুলকাটি বাজার রেলস্টেশনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় মোল্লাহাটে টিসিবির ৫৪০ লিটার সয়াবিন তেলসহ আটক ১ মোল্লাহাটে শিশু যত্ন কেন্দ্রের কেয়ার কিপারদের ৭ দিন ব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে পরিবেশ বান্ধব চারা বিতরণ জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের বাগেরহাট জেলা-কমিটি অনুমোদন নয়ন স্মৃতি নাইট শর্ট ক্রিকেট টুর্নামেন্টে সৈয়দপুর চ্যাম্পিয়ন আত্মসমর্পণকারী দস্যুরা পেল র‌্যাবের ঈদ উপহার বাগেরহাটে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন শেখ তন্ময় এমপি বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির দাবিতে মোংলায় মানববন্ধন
ভাসানচর দেখে এসে যা বললেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা

ভাসানচর দেখে এসে যা বললেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা

নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ছোট্ট দ্বীপ ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ক্যাম্পে ফিরেছে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার ফিরে উখিয়ায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ভাষানচরের সবকিছুই তাদের ভালো লেগেছে।

যোগাযোগ করা হলে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, তাঁরা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নির্মিত ঘর, মসজিদ, সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। সেখানকার সবকিছুই তাঁদের কাছে ভালো লেগেছে। তাঁরা নিজেদের চোখে দেখে আসা ভাসানচরের বর্ণনা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের শোনাবেন।

প্রতিনিধিদলের সদস্যরা মনে করেন, ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাতে পারেন।

ভাসানচর পরিদর্শনে যাওয়া রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলের সদস্য ও টেকনাফের জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ নুর বলেন, ‘আমরা গত শনিবার ভাসানচরে পৌঁছাই। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মাণ করা ঘরসহ সবকিছুই দেখেছি। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সরকার যে ব্যবস্থা করেছে তা দেখে মনে হয়েছে রোহিঙ্গারা এখানে অনেক আরাম-আয়েশে থাকতে পারবে। সেখানে না যাওয়ার আগে ভাসানচর সম্পর্কে অন্য রোহিঙ্গাদের মতো আমাদেরও ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু সবকিছু নিজের চোখে দেখে এখন ভুল ভেঙে গেছে।’

লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ভাসানচরের অনেক কিছুই আমাদের মুগ্ধ করেছে। পরিদর্শনে যাওয়ার আগে ভাসানচরে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেও এখন তা মনে হচ্ছে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সেখানে ঝড় ও জ্বলোচ্ছাস থেকে রক্ষার জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ এবং আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। আমাদের মনে হয়নি ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য কোনোভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হবে।’

প্রতিনিধিদলের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাস উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ের ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাসের চেয়ে অনেক বেশি ভালো হবে। এখানকার মতো ভাসানচরে ডাকাতি ও অপহরণের কোনো ভয় থাকবে না। নিরাপত্তার দিক থেকেও ভাসানচর রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক বেশি ভালো হবে। তবে এরপরও আমার মনে হচ্ছে না, সাধারণ রোহিঙ্গাদের এসব শুনিয়ে ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আগ্রহ সৃষ্টি করা যাবে।’

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যুবক মো. তৈয়ব বলেন, ‘আমাদের রোহিঙ্গা নেতারা ভাসানচর দেখে আজ মঙ্গলবার ফিরেছেন। আমরা তাঁদের কাছ থেকে সেখানকার পরিবেশ, স্থাপনাসহ সব বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। এমনিতে প্রতিনিধিদল সেখানে যাওয়ার পর থেকে ভাসানচর সম্পর্কে তাদের কাছে অনেক ইতিবাচক কথা শুনেছি। এবার রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাবে বলে মনে করছি।’

কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার জানিয়েছেন, প্রতিনিধিদলে দুই নারী সদস্যসহ বিভিন্ন ক্যাম্পের ৪০ রোহিঙ্গা নেতা ও মাঝি ছিলেন। ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের নেতিবাচক ধারণা দূর করতে নিজের চোখে দেখার জন্য তাদেঁর সেখানে নেওয়া হয়েছে। পরিদর্শন শেষে তাঁরা আজ মঙ্গলবার ফিরেছেন। তাঁরা নিজ নিজ ক্যাম্পে ফিরে অন্য রোহিঙ্গাদের বুঝালে তারাও ভাসানচরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে।’

মাহবুব আলম তালুকদার আরো জানান, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভাসানচরে পর্যায়ক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাওয়া হবে।

সরকারি সূত্র জানায়, ভাসানচরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের এক সভায় ভাসানচরের জন্য নেওয়া প্রকল্পের খরচ ৭৮৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা করা হয়। বাড়তি টাকা বাঁধের উচ্চতা ১০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১৯ ফুট করা, অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধিসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য ভবন ও জেটি নির্মাণে ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার ঠাঁই হয়েছিল কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে। সেখানে ৩৪টি ক্যাম্পে গাদাগাদি করে তারা বসবাস করে। সেখান থেকে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের নানা ভুল ধারণার কারণে তারা সেখানে যেতে বিভিন্ন সময়ে অনাগ্রহ দেখিয়েছিল। মূলত তাদের নেতিবাচক ধারণা পাল্টাতে রোহিঙ্গাদের ৪০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলকে গত শনিবার ভাসানচর পরিদর্শনে নেয় সরকার। পরিদর্শন শেষে তারা মঙ্গলবার ক্যাম্পে পৌঁছায়।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

  1. © স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০২০২১, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers