বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৪ অপরাহ্ন

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা  উপলক্ষে জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বাগেরহাট জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ঈদ মোবারক
সংবাদ শিরোনাম :
বাগেরহাটে মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধ, মুসল্লীদের মানববন্ধনে সন্ত্রাসীদের হামলা, আহত-১ মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চয়তায় আরিফা ইসলাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট ও সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য: আল্লামা মামুনুল হক চুলকাটিতে দিনব্যাপী চক্ষু শিবির ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত বিজিবি’র অভিযানে মাদক ও ভারতীয় পন্য আটক বাগেরহাটে বিএনপির কমিটি আওয়ামী লীগ কর্মীদের অর্ন্তভূক্তির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন বাগেরহাটে সেটেলমেন্ট অফিসের পেশকারের সহযোগিতায় জমি দখলের চেষ্টা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শীতবস্ত্র বিতরণ ও মেডিকেল ক্যাম্পেইন চুলকাটি টিভি ও নিউজ মিডিয়া © চুলকাটি টিভি ও নিউজ মিডিয়া © চুলকাটি টিভি ও নিউজ মিডিয়া ফকিরহাটের লখপুর এলাকায় তুলা ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড…..বিস্তারিত আসছে…
নুর ইনায়েত খান: নাৎসীদের হাতে ধরা পড়া প্রথম মুসলিম নারী গুপ্তচর

নুর ইনায়েত খান: নাৎসীদের হাতে ধরা পড়া প্রথম মুসলিম নারী গুপ্তচর

লন্ডনের ব্লুমসবারি এলাকায় যে বাড়িটিতে থাকতেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মুসলিম নারী গুপ্তচর নুর ইনায়েত খান, সেটিতে তাঁর স্মরণে স্থাপন করা হয়েছে একটি নীল ফলক।

ব্রিটেনে বিখ্যাত লোকজন যেসব বাড়িতে থেকেছেন, সেগুলোতে সাধারণত এরকম নীল ফলক লাগানো হয় সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়ার জন্য। তবে এই প্রথম ব্রিটেনে ভারতীয় কোন নারীর জন্য কোন বাড়িতে এরকম নীল ফলক লাগানো হলো।

নুর ইনায়েত খান ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ গুপ্তচর। তিনি কাজ করতেন ব্রিটিশ সরকারের ‘স্পেশাল অপারেশন্স এক্সিকিউটিভ (এসওই) নামের একটি গুপ্ত সংস্থায়। জার্মানি যেসব দেশ দখল করে নিয়েছিল, সেসব দেশে এই সংস্থাটি গুপ্তচর পাঠাতো। উদ্দেশ্য ছিল সেসব দেশে যারা নাৎসী দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তাদের সাহায্য করা।

নুর ইনায়েত খানকে পাঠানো হয়েছিল প্যারিসে। ধারণা করা হয়, তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে কাজ করা প্রথম মুসলিম নারী গুপ্তচর।

নুর ইনায়েত খান জার্মান গুপ্ত পুলিশ সংস্থা ‘গেস্টাপো’র হাতে ধরা পড়েন। এরপর ১৯৪৪ সালের সেপ্টেম্বরে এক কনসেনন্ট্রেশন ক্যাম্পে তার মৃত্যু হয়।

যেভাবে নুর ইনায়েত খান গুপ্তচর হয়েছিলেন

নুর ইনায়েত খানের জন্ম মস্কোতে। তাঁর বাবা ছিলেন ভারতীয়, মা মার্কিন নাগরিক।

লন্ডনের যে বাড়িতে থাকতেন তিনি, সেটিতে লাগানো হয়েছে নীল ফলক
ছবির ক্যাপশান, লন্ডনের যে বাড়িতে থাকতেন তিনি, সেটিতে লাগানো হয়েছে নীল ফলক

তার বাবা এসেছিলেন এক ভারতীয় রাজ পরিবার থেকে। তারা থাকতেন লন্ডন এবং প্যারিসে।

নুর ইনায়েত খানের বয়স যখন মাত্র ১৩, তখন তার বাবা মারা যান। এরপর নিজের মা এবং অন্য ভাইবোনদের সাহায্য করতে তাকে দায়িত্ব নিতে হয়।

সঙ্গীতে তার ভীষণ আগ্রহ ছিল। সেই সঙ্গে শিশুদের জন্য লেখালেখিতে। এসব লেখা প্রকাশিত হয়েছিল ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনে।

জার্মানি যখন ফ্রান্স দখল করে নিল, নুর এবং তার পরিবার ইংল্যান্ডে পালিয়ে আসেন। ১৯৪০ সালের নভেম্বরে তিনি যোগ দেন উইমেন্স অক্সিলারি এয়ারফোর্সে (ডাব্লিউএএএফ)।

১৯৪২ সালের শেষের দিকে তাকে ‘স্পেশাল অপরেশন্স এক্সিকিউটিভের (এসওই) একজন রেডিও অপরেটর হিসেবে রিক্রুট করা হয়।

এসওই এজেন্টদের যুদ্ধ করার প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। সেই সঙ্গে রেডিও এবং টেলিগ্রাফ পরিচালনার। যাতে করে শত্রুপক্ষের পরিকল্পনা ভন্ডুল করে দেয়া যায়।

এদের প্রায়শই নানা রকম গোপন যন্ত্রপাতি এবং অস্ত্রশস্ত্র বহন করতে হতো। যেমন ছাতা বা পাইপের মধ্যে লুকিয়ে রাখা যায় এমন বিস্ফোরক ভর্তি কলম। জেমস বন্ড ছবিতে পরবর্তীকালে যে ধরণের গোপন অস্ত্র দেখানো হতো, অনেকটা সেরকম।

তাদের মিশনগুলো ছিল বেশ বিপদজনক। অনেকেই জানতো, অভিযানে গিয়ে হয়তো তারা আর ফিরে আসবে না। তবে এই ঝুঁকি তারা মেনে নিয়েছিল।

বিবিসির একটি জনপ্রিয় ড্রামা সিরিজ ডক্টর হুর একটি এপিসোডে নুরের ভূমিকায় অভিনয় করেন অভিনেত্রী অরোরা মেরিয়ন
ছবির ক্যাপশান, বিবিসির একটি জনপ্রিয় ড্রামা সিরিজ ডক্টর হুর একটি এপিসোডে নুরের ভূমিকায় অভিনয় করেন অভিনেত্রী অরোরা মেরিয়ন

নুর ইনায়েত খানের কাজ ছিল লন্ডনে গোপন বার্তা পাঠানো। এটি ছিল বেশ বিপদজনক কাজ।

তবে তিনি গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন শত্রুপক্ষের পেছনে। তাকে প্যারাশ্যুটে ড্রপ করা হয়েছিল জার্মান অধিকৃত ফ্রান্সে।

নুর ইনায়েত খানের সাংকেতিক নাম ছিল ‘ম্যাডেলিন‌‌’ এবং ফ্রান্সে তখন আরও যে শত শত গুপ্তচর কাজ করছিল তিনি গিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

নুর ফ্রান্সে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তাদের এসইও নেটওয়ার্কের অনেক গুপ্তচর ধরা পড়েন। তবে তারপরও নুর ফ্রান্সে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন গ্রেফতার এড়ানোর জন্য।

তার প্রথম মিশনে কাজ করার সময়েই তিনি ধরা পড়েন। তবে তিনি কারাগার থেকে পালিয়ে যান। এর কয়েক মাস পর তাকে আবার আটক করা হয়।

আরও তিনজন গুপ্তচরের সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এক কনসেনট্রেশন্স ক্যাম্পে। জার্মান কারারক্ষীরা তাকে এক বছর ধরে প্রায় অনাহারে-অর্ধাহারে রেখেছিল। এরপরও নুর ইনায়েত খান কোন ধরণের গোপন তথ্য ফাঁস করতে অস্বীকৃতি জানান।

নুর ইনায়েত খানকে তার সাহসিকতার জন্য জর্জ ক্রস দেয়া হয়। এটি ব্রিটেনে বীরত্বের জন্য সর্বোচ্চ সামরিক খেতাবগুলোর একটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মাত্র যে তিনজন নারী এই খেতাব পান, তিনি ছিলেন তার একজন।

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ – ২০২৪, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers