বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৬ অপরাহ্ন

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা  উপলক্ষে জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বাগেরহাট জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ঈদ মোবারক
সংবাদ শিরোনাম :
বাগেরহাটে আন্ত-জেলা বাস  মালিক শ্রমিক সমিতির নতুন আহবায়ক কমিটি সভা জেলা ও দায়রা জজ (অবসরপ্রাপ্ত) মো: নুর মোহাম্মদ মোড়লকে সম্মাননা স্মারক প্রদান সাবেক যুবদল নেতা চুলকাটি  সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে  বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামীমের মতবিনিময় বাগেরহাটের যাত্রাপুর ইসলামিক ক্যাডেট স্কুল এন্ড মাদ্রাসার সভাপতি হলেন বদরুল আলম চুলকাটিতে যুবদলের আঞ্চলিক কার্যলয় শুভ উদ্বোধন  খুলনা  ডেঙ্গু  প্রতিরোধে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত খুলনা  ডেঙ্গু  প্রতিরোধে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত বাগেরহাটে সাবেক পৌর কাউন্সিলরসহ ৭ নেতাকর্মী গ্রেফতার সুন্দরবন পরিদর্শনে ২১ দেশের উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা
সুচিকিৎসায় ফার্মাসিস্টের ভূমিকা

সুচিকিৎসায় ফার্মাসিস্টের ভূমিকা

চুলকাঠি ডেস্ক : সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের মৌলিক অধিকারের একটি অধিকার “সুচিকিৎসা”। আসলে কি আমরা সুচিকিৎসা পাচ্ছি? শুধু কি ফিজিশিয়ান, নার্স ও টেকশিয়ান দ্বারাই রুগিকে সুচিকিৎসা দেওয়া যায়? ফিজিশিয়ান রুগির রোগ নির্ণয় আর নার্স রুগিকে দেখাশোনা করলেই কি রুগি আরোগ্য লাভ করতে পারে! ঔষুধের যথাযথ ব্যবহারের কি কোন গুরুত্ব নেই!

না, আসলে আমরা সুচিকিৎসা পাচ্ছি না। সুচিকিৎসা পেতে হলে WHO এর পরামর্শ অনুযায়ী ফিজিশিয়ান, ফার্মাসিস্ট, নার্স ও টেকনিশিয়ানকে এক সাথে রুগিকে সেবা দিতে হবে। সেখানে আমাদের দেশে সাধারণ জনগণকে ফার্মাসিস্ট ব্যতিত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্যসেবার মূল বিষয় হলো “রোগ-ঔষুধ তত্ত্ব ” অর্থাৎ রোগ হলে ঔষুধ গ্রহণ করতে হবে। ফিজিশিয়ান রোগ নির্ণয় করে দেওয়ার পর রুগি যে ঔষুধ গ্রহণ করে আরোগ্য লাভ করে তা কিন্তু একজন ফার্মাসিস্টের হাত থেকেই তৈরি। আর এই ঔষুধ গ্রহণের মাত্রা, ঔষুধের কার্যকারিতা, ঔষুধের সঠিক ব্যবহার, ঔষুধের পার্শ্বপতিক্রিয়া সম্পর্কে একজন “ঔষুধ বিজ্ঞানি” অর্থাৎ ফার্মাসিস্ট ছাড়া আর কে ভাল জানতে পারে।

এই করোনার সময়ে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, একটি দেশের জনগণ অসুস্থ হলে দেশ অসুস্থ হয়ে যায় অর্থাৎ দেশ স্বাভাবিক নিয়মে আর চলেনা। তাই দেশকে সুস্থ রাখতে হলে দেশের জনগণকে সুস্থ রাখতে হবে। ভুল ঔষুধ প্রয়োগে ও ভুল মাত্রায় ঔষুধ গ্রহণে জনগণকে অসুস্থতার থেকে রক্ষা করার জন্য উন্নত দেশসহ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, পাকিস্তানেও ফিজিশিয়ান সাথে ফার্মাসিস্টরাও অনেক বছর ধরে প্রত্যক্ষ ভাবে রুগিকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বে আমাদের দেশের ঔষুধশিল্পটা যতটা ঊর্ধ্বমুখী তার বিপরীতে ততোটাই নিম্নমুখী হলো আমাদের এই চিকিৎসা খাত। আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থার দুর্বলতার জায়গাটা বুঝতে পেরেছি। তাই অবিলম্বে “হসপিটাল ফার্মেসি” চালু করে ফার্মাসিস্টদেরকে রুগিকে সেবা করার সুযোগ করে দিন। তাহলে “ফার্মাসিস্টরা” পাবে তাদের ন্যায্য অধিকার আর জনগণ পাবে মানসম্মত চিকিৎসা।

হসপিটালে যদি ফার্মাসিস্ট না থাকে তাহলে, প্রেসক্রিপশন অনুসারে সঠিক ওষুধের ডিসপেন্সিং, ড্রোজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সঠিকভাবে মনিটরিং করা, মেডিকেল হিস্ট্রি সংরক্ষণ করা, অ্যান্টিবায়োটিক এর সতর্কতা ও রুগির রেজিস্ট্রার রেকর্ড করে রাখা, ড্রাগ ইন্টারঅ্যাকশন চেক করা, রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও ক্লিনিকাল ট্রায়াল ইত্যাদি কাজ করতে কে বা কারা ফার্মাসিস্ট থেকে ভাল করতে পারবে। রুগির মানসম্মত সেবার জন্য অবশ্যই “হসপিটাল ফার্মেসি” চালু করা প্রয়োজন।

গবেষণায় দেখা গেছে, হসপিটালে ও কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োজিত থাকলে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ যেমন (ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্ত চাপ, স্টোক, হৃদরোগ ইত্যাদি) দীর্ঘমেয়াদী ঔষধ গ্রহণে যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তা ৬৭ শতাংশ কমানো যায়।

বাংলাদেশে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ‘হসপিটাল ফার্মাসিস্ট’ চালু করার একটি সরকারি গেজেট প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজ অবধি সেই গেজেটের বাস্তবায়ন হয়নি। WHO নির্দেশনা অনুসারে, বিশ্বের ফার্মাসিস্টদের ৫৫ শতাংশ কাজ করবেন ‘কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট’ হিসেবে, ৩০ শতাংশ ফার্মাসিস্ট কাজ করবেন হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায়, ৫ শতাংশ কাজ করবেন সরকারি সংস্থায়, ৫ শতাংশ শিক্ষা কার্যক্রমে এবং ৫ শতাংশ কাজ করবেন বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানিতে। অথচ বাংলাদেশের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ফার্মাসিস্টরা কাজ করছেন বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানিতে।

এই মহামারির সময়ে উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ফিজিশিয়ান, ফার্মাসিস্ট ও নার্স একত্রে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আমাদের দেশের অপূর্ণ চিকিৎসা ব্যাবস্থার নাজেহাল অবস্থার কথা কে না জানে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে, অপূর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সুগঠিত করতে হবে এবং সরকারি ভাবে হসপিটালে ফার্মাসিস্টদের কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। ফিজিশিয়ান যেমন রোগ নির্ণয়ে বিশেষজ্ঞ তেমনি ঔষুধ নির্ণয়ের বিশেষজ্ঞ হলেন ফার্মাসিস্ট।

স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরেও সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। আমাদের রোগ হলে সাধ্যের মধ্যে ঔষুধ পাচ্ছি ঠিকই কিন্তু ঔষুধের যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত দেশের সরকারি হসপিটাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট দের কাজে লাগানো। ফার্মাসিস্টদের অর্জিত জ্ঞানকে স্বাস্থ্যসেবায় সরকারি ভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ করে দিলে সুস্থ থাকবে জনগণ, স্বাস্থ্য খাতে এগিয়ে যাবে দেশ।

লেখক : ফার্মেসি বিভাগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ – ২০২৪, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers