সোবহান হোসাইন : করোনা সংক্রমণ রোধ ও সেবা প্রার্থীদের সময় বাঁচাতে রিসিপশনে সাক্ষাত করেই প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা দিচ্ছেন বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়। যার ফলে কোন প্রকার হয়রানি ছাড়াই তাৎক্ষনিক ভাবে সেবা পাচ্ছেন সাক্ষাতে আসা প্রার্থীরা। অল্প সময় ও সহজে সেবা পেয়ে খুশি বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলার আগত সেবা প্রার্থীরা। পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিয়মানুযায়ী যে কোনো সমস্যা নিয়ে কাউকে পুলিশ সুপারের সহযোগিতা পাওয়ার জন্য প্রথমে তার আবেদনপত্রটি ওই কার্যালয়ের রিসিভ শাখায় জমা দিতে হয়। পরবর্তীতে রিসিভ শাখার কর্মকর্তা পুট আপ ফাইলে দেন। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা আবেদন পত্রটি যাচাই বাচাই করে দেন পুলিশ সুপারের কাছে। পুলিশ আবেদনপত্রটি দেখে আবারও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে পাঠান এতে অনেক সময় দুই থেকে তিনদিন বা তারও বেশি সময় লেগে যেত। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার এসব প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গে জন দূর্ভোগ কমাতে রিসিপশনেই সেবা গ্রহীতাদের সমস্যা শুনছেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন শতাধিক মানুষকে এভাবে সেবা দিচ্ছেন তিনি। বুধবার ১৯ আগস্ট সকালে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মূল ফটক পেরিয়ে রিসিপশনে দেখা যায়, পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় অভ্যর্থনা ডেস্কের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার সামনে আবেদনপত্র হাতে রয়েছেন ১০ থেকে ১৫ জন লোক। প্রত্যেকের কাছ থেকে সমস্যা শুনছেন এবং হাতে থাকা আবেদন পত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে মার্ক করে দিচ্ছেন। তাৎক্ষনিকভাবে সেবা পেয়ে খুশি বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা সাক্ষাত প্রার্থীরা। সেবা প্রার্থী ব্যবসায়ী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, একটি অস্ত্রের লাইসেন্সের ভেরিফিকেশনের জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসেছি। এসে দেখি রিসিপশনে কয়েকজন লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। আমিও লাইনে দাঁড়ালাম। কয়েক মিনিটের মধ্যেই এসপি স্যার আসলেন। তিনি ক্রমানুযায়ী একজন একজন করে ডেকে কথা বলছেন। আমার পালা আসলে তিনি আমার কথা শুনলেন। একজন কর্মকর্তাকে ডেকে আমার কাজ করে দিতে বললেন। এত সহজে এসপি সাহেবের দেখা পাব এবং আমার কাজ হয়ে যাবে তা কখনও ভাবিনি। শুধু শহিদুল ইসলামই নয় প্রতিদিন সকালে দাপ্তরিক কাজ শুরুর আগে সাক্ষাত প্রার্থীদের দাবি নামা শুনে এভাবেই সেবা দিয়ে থাকেন পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, প্রতিদিনই শতাধিক মানুষ বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমার কাছে আসেন। দাপ্তরিক কাজের চাপে অনেক সময় তাদের কথা শুনতে দেরি হয়। তাই লোকজনের হয়রানি কমাতে এবং সময় বাঁচাতে সকালে দাপ্তরিক কাজ শুরুর আগেই রিসিপশনে এসে তাদের কথা শুনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে থাকি। এতে সেবা গ্রহীতারা যেমন খুশি হন, তেমনি আমিও স্বাভাবিক ভাবে দাপ্তরিক কাজ করতে পারি। শুধু সকাল নয়, দিনের যেকোনো সময় ৬ জন সাক্ষাত প্রার্থী এক সাথে হলেই আমি আবার রিসিপশনে চলে আসি এবং তাদের কথা শুনি।
Leave a Reply