মঙ্গলবার, ০৯ অগাস্ট ২০২২, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
চুলকাঠি ডেস্ক : বর্তমানে প্রত্যেক দেশের ভেতর চলছে এক অস্থির অবস্থা, যেখানে ভয়াবহ মহামারী করোনা তার আতঙ্ক দিয়ে গ্রাস করতে যাচ্ছে আমাদের। কিন্তু প্রত্যেকের সচেতনতা, সবার প্রতি দায়িত্বশীল মানবিক আচরণ এর মাধ্যমে একটু হলেও দূরে থাকা সম্ভব। তাই এই থমকে থাকা সঙ্কটময় মুহূর্তে যেন থেমে না থাকে পড়াশোনা তাই আমাদের আজকের আলোচনা ব্যাকরণ অংশের অন্য একটি প্রশ্ন নিয়ে। আশা করি শিক্ষার্থীদের উপকার হবে।
প্রশ্নঃ ভাষার অভ্যন্তরীণ নিয়ম শৃঙ্খলা আবিষ্কারের নামই ব্যাকরণ- আলোচনা কর।
উত্তরঃ ব্যাকরণ শব্দের বুৎপত্তি বি+আ+√কৃ+অন। এর অর্থ বিশেষভাবে বিশ্লষেণ করা। ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “যে বিদ্যার দ্বারা কোনো ভাষাকে বিশ্লেষণ করে তার সকল বিষয় আলোচিত হয় এবং সেই ভাষার পঠনে, লিখনে ও কথোপকথনে শুদ্ধরুপে তাহার প্রয়োগ করা যায় সেই ভাষাকে সেই ভাষার ব্যাকরণ বলা হয়।”
ব্যাকরণ হলো ভাষার সংবিধান। ভাষাকে ঘিরে ব্যাকরণ এর সৃষ্টি। ভাষার গতি, প্রকৃতি ব্যাকরণে আলোচনা করা হয়। ভাষার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ব্যাকরণ থেকে ধারণা লাভ করা যায়। দীর্ঘদিন ব্যবহারে ভাষার যে সব রীতি প্রচলিত হয়েছে তার বিশ্লেষণই ব্যাকরণের বিষয়বস্তু। ভাষা সৃষ্টি হয়েছে আগে ব্যাকরণ এসেছে ভাষার পথ ধর। অর্থাৎ ভাষা ব্যবহারের মধ্য ভাষার যখন বিশেষ কিছু নিয়ম তৈরি হয়ে গেছে তখন তা ব্যাকরণ এর নিয়ম। ভাষার নিয়ম কানুনকে সুশৃঙ্খল করে বিধায় ব্যাকরণ ভাষার সংবিধান।
কোনো ভাষা শিখতে বা জানতে গেলে সেই ভাষার বর্ণমালা থেকে শুরু করে বাক্য সংযোজন-প্রণালী পর্যন্ত কোনো না কোনো নিয়ম রীতি রয়েছে। অথচ অনেক সময় তা আছে বলে মনে হয় না। আসলে ভাষা কোন এলোমেলো ধ্বনির সমষ্টি নয়। মুখ থেকে বের হওয়া ভাষা গুলো এর সঠিক ও সুশৃঙ্খল নিয়ম থাকে। কাজেই দেখা যায় ব্যাকরণ কোনো ভাষার উপাদান এবং উপকরণ বিশ্লেষণ করে এর রীতি নীতি ও নিয়ম পদ্ধতি আবিষ্কার করে ভাষার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা আবিষ্কার করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- “আমি শুদ্ধভাবে উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ পড়তে চাই।” এই বাক্যটিকে যদি বলা হয়- পড়তে উচ্চমাধ্যমিক আমি ব্যাকরণ চাই শুদ্ধভাবে, তাহলে বাক্যটির অর্থ যেমন কোন ভাবে বোধগম্যহয় না তেমনি বাক্যটির বক্তব্য প্রকাশের কোনো যথার্থ নিয়ম বা শৃংখলা রক্ষিত হয় না।
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা স্পষ্ট যে ভাষার অভ্যন্তরীণ নিয়ম শৃঙ্খলার আলোচনাই ব্যাকরণ। ব্যাকরণ বিশ্লেষণ করে- ভাষার কখন কি হওয়া উচিত তা বলে না বা নির্দেশ করে না বা বিধান প্রণয়ন করে না, বর্ণনা করে মাত্র। ব্যাকরণ ভাষার শুদ্ধতা যাচাই এর একমাত্র অবলম্বন হিসেবে স্বীকার্য।
উপস্থাপনায় : রাহুল বণিক, বিবিএ(সম্মান), এমবিএ(হিসাববিজ্ঞান)
Leave a Reply