শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন

চুলকাটি অনলাইন টিভি ও নিউজ মিডিয়া, সত্য প্রকাশের অঙ্গীকার। 
এডিটার’স মেইলবক্স: চীন-ভারত বৈরিতায় বাংলাদেশ ও করোনার ওষুধ

এডিটার’স মেইলবক্স: চীন-ভারত বৈরিতায় বাংলাদেশ ও করোনার ওষুধ

বাংলাদেশ ভারতের বন্ধু। বাংলাদেশ চীন-এরও বন্ধু। কিন্তু চীন আর ভারত যখন তাদের দীর্ঘ দিন ধরে চলা সীমান্ত বিরোধ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দিকে চলে যায়, তখন বাংলাদেশের অবস্থান কী হতে পারে?

”সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারত ও চীনের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। এদিকে নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত নিয়ে ভারতের সাথে ভুটান ও নেপাল বিরোধে জড়িয়েছে। সত্যিকার অর্থে ভারতের অনেকটা কোণঠাসা অবস্থা। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় অনেকের নজর এখন বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে।”চীন যে বাংলাদেশকে কাছে পেতে চাইছে তা অনেকটা পরিষ্কার। কিছুদিন আগে চীনের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর শেষে বলে গেল চীন করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার করতে পারলে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা দেয়া হবে। এদিকে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অস্বীকার করার কিছু নেই। ভারতের একটি নামকরা দৈনিকে বাংলাদেশকে কটূক্তি করে “খয়রাতি” বলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেনি। বাংলাদেশের অবস্থান আসলে কী হতে পারে?”

শুরুতেই যেটা বলেছি, প্রশ্নটা বেশ জটিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চীন পাকিস্তানকে সমর্থন করায় পরবর্তী সময়ে চীনের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক শীতল ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের সাথে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন, বিশেষ করে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ-এর ক্ষেত্রে। কিন্তু রাজনৈতিক দিক থেকে ভারতের সাথে বন্ধু প্রতিম সম্পর্ক বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য। কাজেই, শেখ হাসিনাকে এখানে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে, ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হচ্ছে। সেজন্য বাংলাদেশ প্রকাশ্যে কোন এক পক্ষকে সমর্থন করতে পারে না।তবে নিরপেক্ষ থাকার যেমন অনেক লাভ আছে, তেমন ঝুঁকিও আছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারত হাসিনা সরকারকে যে সমর্থন, বিশেষ করে ২০১৪ সাল থেকে দিয়ে আসছে, তার বিনিময়ে দিল্লি যদি ঢাকার কাছ থেকে সমর্থন দাবি করে, তখন বিষয়টি শেখ হাসিনার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথে থাকার কোন সম্ভাবনা আছে বলে আমার মনে হয় না মি. রহমান। চীনের সাথে থাকার যুক্তি অনেক আছে। তবে ‘চীন কার্ড’ খেলে ভারতের কাছ থেকে কিছু আদায় করার মত পদক্ষেপ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে আমার মনে হয়।লাদাখের গালওয়ান অঞ্চলের মারামারিতে ২০জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয় এবং বেশ কয়েকজন ভারতীয় অফিসার এবং জাওয়ান চীনের হাতে বন্দী হয়। কিন্তু এই সংঘর্ষে চীনের কয়জন হতাহত হলো, সেটা না বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন ভারত থেকে:

”ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় তারা মিডিয়াকে জানায় তাদের ২০ জন সেনা যারা নিহত হয়। কিন্তু চীন যথারীতি তাদের কত জন সেনা নিহত হয়েছে সেটা জানাতে অস্বীকৃতি জানায়। চীনের সরকারি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস তাদের টুইটার পেজে জানায় তাদেরও বেশ কিছু সেনা নিহত হয়েছে কিন্তু সে সংখ্যাটা কত সেটা চীন জানায়নি। চীনে সেভাবে মিডিয়া ও গণতন্ত্র না থাকায় এসব খবর চীন সরকার দিতে বাধ্য নয়। চীনে বিবিসি ও তার মত আন্তর্জাতিক মিডিয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কাজেই ওই সংঘর্ষে কতজন চীনা সেনা নিহত হয়েছে সেটা অজানাই থাকবে।”প্রশ্ন হল চীন কেন সব সময় সব তথ্য লুকিয়ে রাখে? উনিশ’শ বাষট্টি সালের যুদ্ধের সময় কতজন চীনা সেনা নিহত হয়েছিল সেটা চীন সে সময় সারা বিশ্ব থেকে লুকিয়েছিল। উনিশ’শ চুরানব্বই সালে এসে চীন সরকার অফিসিয়ালি ১৯৬২র যুদ্ধে তাদের হতাহতের সংখ্যা জানায়। করোনা ভাইরাস নিয়েও আমরা দেখেছি চীন সরকার বিশ্ববাসীর কাছে তথ্য নিয়ে লুকোচুরি খেলেছে।”

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০২০২১, www.chulkati24.com

কারিগরি সহায়তায়ঃ-SB Computers