শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪০ অপরাহ্ন
করোনার প্রভাবে কাজকর্মহীন অসহায় শিল্পীদের জন্য অর্থ ও খাবার সংগ্রহ করে তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান। এই সাংগঠনিক নেতৃত্বের জন্য চিত্রপাড়ায় তিনি বেশ আলোচিত।
সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন।
* যুগান্তর: সময় কাটছে কীভাবে?
** জায়েদ: বাসায় থাকছি এবং পরিবারকে সময় দিচ্ছি। আসলে কাজের ব্যস্ততা এমন ছিল পরিবারকে ঠিকমতো সময়ও দিতে পারতাম না। মা-বাবার সঙ্গেই আছি এবং আত্মীয়স্বজনের খবর নিই। মাঝে মাঝে এফডিসিতে যাই সমিতিতে। শিল্পীদের খোঁজখবর রাখছি। এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম করছি, সিনেমা দেখছি এবং নতুন একটি সিনেমার স্ক্রিপ্ট নিয়ে নিয়মিত বসছি।
* যুগান্তর: এ সময়ে শিল্পীদের পাশে কতটা দাঁড়াতে পেরেছেন?
** জায়েদ: আমরা ইতিমধ্যে চারবার বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছি। সমিতির পক্ষ থেকে প্রথমবার মাস্ক, হ্যান্ড গ্লভস, হ্যান্ডওয়াশ দিয়েছি। এজন্য চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল ভাই আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। তিনি অনেক কিছু আমাদের শিল্পীদের জন্য দিয়েছেন। এর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্যাকেজ দেয়া হয়েছে। প্রায় ৭০০ শিল্পীর বাসায় খাবার দিয়েছি। এছাড়াও আর্থিকভাবে সাহায্য করছি নিজ থেকেও। এর পরও সদস্যদের মেসেজ দিয়েছি এই বলে কারোর কোনো সমস্যা থাকলে আমাকে জানান, আপনার পরিচয় গোপন রাখা হবে, আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
* যুগান্তর: এই মুহূর্তে সবাই বাসায় অবস্থান করছেন। কিন্তু আপনি শিল্পীদের পাশে থাকার জন্য নিজের জীবনের ঝুঁকি কেন নিলেন?
** জায়েদ: আমি শিল্পী সমিতির দু’বারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদকের চেয়ারটা আমাকে আরও বেশি দায়িত্বশীল করেছে। আমি স্বাবলম্বী, কিন্তু এই যে যারা শিফটের শিল্পী আছেন, দিন আনে দিন খায়, তাদের কী অবস্থা? শিল্পীরা কিন্তু অভিমানী। তারা কিন্তু কারোর কাছে হাত পাতেন না। এসব যখন নিজেকে ভাবায় তখন আসলেও কষ্ট লাগে। আসলে এসব ভাবনা থেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েও পাশে থাকার চেষ্টা করছি। শুধু আমিই নই আমার সভাপতিও সেটা করছেন। তার পরও কত কথা আমাকে নিয়ে।
* যুগান্তর: কেউ কেউ বলছেন আপনি শুধু সমিতির সদস্য শিল্পীদেরই ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন। অন্যদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না।
** জায়েদ: আমি কাজটি করছি সমিতির পক্ষ থেকে। সুতরাং সমিতির সদস্যরাই এতে প্রাধান্য পাবে, এটাই তো স্বাভাবিক। এর বাইরে যদি কারও সহযোগিতার দরকার হয় তাহলে তারা এসে আমাকে বললে আমি নিশ্চয়ই তাদের পাশেও দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।
* যুগান্তর: শিল্পী ছাড়া নিজ গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন কি?
** জায়েদ: চিত্রনায়ক শব্দটি বসানোর আগে আমি একজন মানুষ। আমি বরাবরই একটু আবেগপ্রবণ। আমার মায়া বেশি, ভালোবাসা বেশি। এর জন্য শত্র“ও বেশি। আমি সবার জন্য কাজ করি এবং করতে চাই। আমার জেলা পিরোজপুরে ‘সাপোর্ট’ নামে আমার নিজের একটি সংগঠন আছে। সেটির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ ও আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করা হচ্ছে।
* যুগান্তর: করোনার প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে সতর্কতা ও করণীয় কী?
** জায়েদ: যে শত্রুকে চোখে দেখা যায় না তাকে মোকাবেলা কীভাবে করা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে কাজ করছে, দেশীয় সরকারের তরফ থেকে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ও স্বাস্থ্য বিভাগ যেসব করতে বলেছে তা মেনে চলতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং মানুষের সম্মুখে যাওয়া যাবে না। খুব জরুরি কাজ ছাড়া বাসা থেকে বের হওয়া যাবে না। এমনকি পরিবারের মধ্যেও ঘনত্ব বাড়ানো যাবে না। সব কিছু মেনে চললে করোনাকে জয় করা সম্ভব। নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তা এ দুর্যোগ থেকে আমাদের সবাইকে রক্ষা করবেন।
* যুগান্তর: আপনার অভিনীত মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ছবিগুলো নিয়ে কতটা আশাবাদী?
** জায়েদ: আমার অভিনীত মুক্তির অপেক্ষায় আছে বেশক’টি ছবি। ইতিমধ্যে ‘বাহাদুরি’, ‘এ দেশ তোমার আমার’ ছবি দুটির মুক্তির কথা চলছিল। শুটিং চলমান ছিল ‘হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘মিশন সিআইডি’সহ কয়েকটি ছবির। বেশ কিছুদিন আগে যুক্ত হলাম মালেক আফসারী পরিচালিত নতুন ছবি ‘টেনশন’-এ। ৭ এপ্রিল থেকে এ ছবির শুটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন করোনার কারণে আটকে গেছে। যে ছবিগুলো মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার সবই ভালো মানের ছবি এবং অ্যাকশন-রোমান্টিক ফুল প্যাকেজের গল্প। ছবিগুলো ঠিক সময় মুক্তি পেলে আশা করছি দারুণ কিছু হবে।
Leave a Reply